বিলাল উদ্দিন/স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চরম অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার চিত্র ফের প্রকাশ পেল। বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫ খ্রী: দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে বারান্দায় সন্তান প্রসব করেছেন দুইজন প্রসূতি নারী। তাদের একজনের নবজাতক সন্তান জন্মের কিছুক্ষণ পরই মারা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চোখের সামনে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও বেদনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রসূতি নারীরা হাসপাতালে আসার পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও জরুরি ও প্রসূতি ওয়ার্ডে কোনো চিকিৎসক বা নার্সের সহযোগিতা পাননি। বাধ্য হয়ে পরিবার-পরিজনের সহায়তায় হাসপাতালের বারান্দায়ই সন্তান প্রসব করেন তারা।
এ ঘটনায় মৃত শিশুর পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, কর্তব্যরত নার্স ও ডাক্তারদের চরম অবহেলার কারণেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঘটেছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “হাসপাতালে এসেই প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন ওই মা। বারবার বলার পরও কেউ এগিয়ে আসেনি। একপর্যায়ে হাসপাতালের বারান্দায়ই সন্তান প্রসব করেন। পরে জানা গেল নবজাতকটি আর বেঁচে নেই।”
এ ঘটনায় সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমন অব্যবস্থা আর কতদিন চলবে? সেবার নামে উপহাস আর দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে কি এভাবেই মা ও নবজাতকের প্রাণ হারাতে হবে?
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।”
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সরকারি হাসপাতালে বছরের পর বছর ধরে এমন অব্যবস্থাপনা চলে আসছে। প্রয়োজনীয় জনবল, মনিটরিং ও জবাবদিহিতার অভাবেই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলেছে।
সিলেটবাসীর প্রশ্ন, “সরকারি হাসপাতালে সেবার মান কি কোনোদিনই ঠিক হবে না?”
Leave a Reply