রিয়াজ রাব্বী,ক্যাম্পাস প্রতিনিধি (রুয়েট):
রাজশাহী প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রধান ফটক প্রাঙ্গণে মতিহার থানা বিএনপির কর্মী সম্মেলনের প্রস্তুতির প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, শনিবার (২৬ এপ্রিল) সাড়ে তিন ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে।
আজ দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকে মতিহার থানা বিএনপির কর্মী সম্মেলনের জন্য ব্যানার, সাউন্ড সিস্টেম ও চেয়ার নিয়ে স্টেজ বানানোর প্রস্তুতি চলছিল। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন হল থেকে প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয় ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে রুয়েট প্রাঙ্গণে সম্মেলন করার অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চান। এসময় বিএনপির নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তর্ক বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে রুয়েট প্রাঙ্গণে সম্মেলন করবেন না বলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা চেয়ার ও ব্যানার খুলে নিয়ে চলে যান।
শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘রাজনীতির কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘রুয়েটে রাজনীতি, চলবে না চলবে না,’ ‘বিএনপি’র কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘রুয়েটে রাজনীতি কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, প্রভৃতি স্লোগান দিতে দিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে জড়ো হয়।
এ সময় রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষার্থীদের বলেন, “প্রোগ্রামের বিষয়ে আমরা জানতাম না, আমাদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। যখন জানতে পারি, আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করি। তোমরা নিশ্চিত থাকতে পারো, রুয়েটে রাজনীতি চালুর বিষয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই, আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় রুয়েটে রাজনীতি ফিরে আসবেনা।”
এদিকে মতিহার থানা বিএনপির আহ্বায়ক শিক্ষার্থীদের সাথে তর্ক বির্তকের সময় বলেন, “আমরা উপাচার্য কে জানিয়েছি, এখানে দুইটা গেট আছে, একটা গেট বন্ধ থাকে। বন্ধ থাকা গেটের সামনে ফাঁকা জায়গায় সম্মেলন করবো।”
শিক্ষার্থীরা বলেন, “রুয়েট ফটক প্রাঙ্গণে বিএনপির প্রোগ্রামের স্টেজ বানানো হচ্ছে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে সম্মেলন বন্ধ করেছে অথচ প্রধান ফটকের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রশাসনকে আগেই অবহিত করেনি, তাহলে প্রধান ফটকের নিরাপত্তা কর্মীরা কি করছিল? আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নিবে?
এ বিষয়ে রুয়েট ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে বিবৃতি দিয়েছে, বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
‘আজ ২৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি. তারিখ দুপুর-এ রুয়েট প্রধান ফটকের সামনে একটি রাজনৈতিক দলের সভা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। রুয়েট প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্র তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগীতায় তা দ্রুত সরানোর কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।’
রুয়েট প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক কার্যক্রমের নিন্দা বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
‘রুয়েট প্রশাসন স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় চতুরে বা তার সংলগ্ন এলাকায় কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম বা সভার অনুমতি নেই এবং রুয়েট প্রশাসন এই ধরনের কার্যক্রমের তীব্র বিরোধিতা করে এবং এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।’
রুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ উল্লেখ্য করে আরো বলা হয়েছে, ‘রুয়েট একটি শিক্ষা এবং গবেষণার স্থান – এখানে রাজনীতি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, কাজেই কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি চলার কোনো অবকাশ নেই। সবাইকে রুয়েটের শান্তিপূর্ণ শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে’।
Leave a Reply