মীর হোসেন মোল্লা (আরমান)ঃ ঈদের পর ফের অস্থির হয়ে উঠেছে সবজির বাজার। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। ৮০ টাকা ছাড়িয়েছে পটল, শিম, কচুর লতিসহ ছয় সবজির দাম। ৫০ টাকার কমে মিলছে কেবল আলু, টমেটো আর পাকা মিষ্টি কুমড়ো। কয়েকদিনের ব্যবধানে সবজির এমন ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে আর ঈদে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় দাম বেড়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, রমজানের মতো তদারক সংস্থাগুলোর কড়া তদারকি না থাকায় দাম বাড়ছে সবজির। দৌরাত্ম্য বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদেরও।
ঋতু পরিক্রমায় বসন্ত শেষ না হলেও বাজারে এসেছে গ্রীষ্মের নানা সবজি। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে বাজারে দেখা মিলছে কাঁকরোল, পটল, করলা, শসা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়ো, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ইত্যাদি। এর মধ্যে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কাঁকরোল, পটল, করলা ও ঝিঙের দামও ১০০ টাকা প্রায়। অন্যান্য সবজির মধ্যে আলু ২৫, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ৩০, ঢেঁড়স ৬০, বরবটি ৭০, লতি ১০০, বেগুন ৬০-৮০, মিষ্টি কুমড়ো (কাঁচা) ৬০, পাকা মিষ্টি কুমড়ো ৩০, পেঁপে ৬০, লাউ ৫০ এবং চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এদিকে, পেঁয়াজেরও দাম বেড়েছে ঈদের পর। সপ্তাহের ব্যবধানে জাতভেদে ৫-১৫ টাকা বেড়েছে পণ্যটির দাম। মেহেরপুরী পেঁয়াজ ৩০ ও বারি পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। অপরিবর্তিত রয়েছে রসুনের দাম। ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।
তবে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ঈদের পর তদারক সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দৌরাত্ম্য বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদেরও। রমজানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাজার তদারক সংস্থাগুলো যেভাবে সক্রিয় ছিল এখন আর সেরকম নেই। তাদের নিষ্কিয়তার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া ব্যবসায়ীদেরও সচেতন হওয়ার বিষয় আছে। চোর-পুলিশ খেলে তো বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এখন আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে, তাদের ঠেকাতে কৃষকদের সরাসরি পণ্য বাজারজাতকরণের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
এর পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক গণমাধ্যমকে বলেন, নানা কারণে সবজির দাম বাড়ছে। ঈদের ছুটিতে একটু সমস্যা হয়েছে। প্রতিদিন অভিযান চলছে, কাঁচা বাজারেও আমাদের নজর আছে। অন্যায়ভাবে কেউ বাজার অস্থিতিশীল করলে ব্যবস্থা নেবো।
সবজির দাম কম থাকায় রমজান মাস স্বস্তিতে কাটলেও ফের অস্থির হতে শুরু করেছে বাজার। কাজেই বাজার ঠিক রাখতে হলে বাজার তদারকির কাজটি নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে। লেখকঃ মীর হোসেন মোল্লা (আরমান)/ সাংবাদিক।
Leave a Reply