1. mdmirhossainmolla.bd@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@banglarrup.com : Banglar Rup : Banglar Rup
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আলোচিত এসি গোলাম রুহানী সাময়িক বরখাস্ত গোয়াইনঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট: ভুগছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল মিডফোর্ডের ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবীতে সৈয়দপুর ও জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা হচ্ছে কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ময়মসিংহে র‌্যাব-১৪ কর্তৃক অভিযানে মাদকসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ০১ বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে শায়খে চরমোনাই প্রার্থী — দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে আশাবাদী ভোটাররা চাঁদাবাজদের পক্ষে তদবিরকারীরা গ্রেপ্তার হবেন: হুঁশিয়ারি এডিসির ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে বিমানে বোমা থাকার ভুয়া তথ্য দেন মা: র‍্যাব মহাপরিচালক ময়মনসিংহে মৃত্তিকার বিভাগীয় কার্যালয় ও গবেষণাগার উদ্বোধন করেন মহাপরিচালক

চৌদ্দগ্রামে টানা ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ৪২ বার

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: “দুধ খেতে মুখ পুড়েছে, তাই দই খেতে ফুঁ দিয়ে খাই।” এটি বাংলা ভাষার একটি জনপ্রিয় প্রবাদ। যা অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্ব বোঝায়। এর অর্থ হলো গরম দুধ খেতে মুখ পুড়ে যাওয়ায় শীতল দধিও ফুঁ দিয়ে খায় মানুষ। মানুষ একবার কোনো তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হলে, ভবিষ্যতে সেই বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্ক থাকে এবং পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়। ২০২৪ এর ভয়াবহ বন্যার কথা চৌদ্দগ্রামবাসী এখনো ভুলেনি। গত বছরের বন্যার দুঃস্মৃতি যেন এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় তাদেরকে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গত চারদিনের টানা ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি উপজেলার বেশকিছু স্থানে মানুষের বসতবাড়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আঙ্গিনা পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশকিছু যুগোপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার বাছাইকৃত স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বয়ে তৈরী করা ‘কুইক রেসপন্স টিম’, পৌর প্রশাসন, ইউপি সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতা নিরসনে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জামাল হোসেন। এতে সাধারণ মানুষের প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। তারপরও এমন বৃষ্টিপাত আর কয়েকদিন থাকলে অধিকাংশ মানুষের বাড়ীঘর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছে চৌদ্দগ্রামবাসী। এ কারণে গত বছরের বন্যার মত ক্ষতির শংকায় আছে সাধারণ মানুষ। গত বছরের ভয়াবহ চিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন সবাই।

বৃহস্পতিবার উপজেলার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা, আলকরা, গুনবতী, জগন্নাথদীঘি, চিওড়া, বাতিসা ও কালিকাপুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মাহাসড়ক সংলগ্ন সীমান্তবর্তী প্রায় এলাকা বৃষ্টির পানি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে প্লাবিত। অন্যান্য এলাকার নিচু বসতভিটাগুলোতেও পানি উঠেছে। অনকে এলাকায় কৃষি জমিনগুলো ডুবে যাওয়ায় আমন বীজতলা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে এলাকার মৎস্য চাষী ও পোল্ট্রি খামারীরা। প্রায় এলাকার গ্রামীণ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর উপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টিতে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বালুজুরি খালের গত বছরের বন্যার ফলে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আশেপাশের এলাকার ফসলী জমিন পানিতে টইটুম্বুর হয়ে নিমজ্জিত হয়েছে আমন বীজতলা। পৌরসভার গোমারবাড়ী গ্রামের জামাল হোসেন বলেন, যেভাবে ভারতের দিক থেকে আসা পানি প্রবাহিত হচ্ছে, তাতে ভয়ে আছি। গত বছরের মতো হঠাৎ করে কখন জানি পানি উঠে যায় বসতঘরে।

একই চিত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বপাশের প্রায় সকল ইউনিয়নের। এরমধ্যে ফেনীর নিকটবর্তী দক্ষিণ আলকরার এলাকাগুলোতেও পানি বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, চাষকৃত মাছ রক্ষার্থে স্থানীয় মৎস চাষীরা ব্যস্তসময় পার করছেন। জলাশয়ের চারপাশে নেটের বেড়া দিয়েছেন তারা। অনেক স্থানে পানির স্বাভাবিক স্রোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় নীচু এলাকায় তৈরী হয়েছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকার জলাশয়ের মাছ ভেসে গেছে লোকালয়ে। রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে জমে গেছে পানি। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম সহ প্রতিষ্ঠানে চলমান অর্ধ-বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এসব এলাকার সাধারণ কৃষক। আমন বীজতলার ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি আমন রোপনেও ঝুঁকি বেড়েছে অনেকটা। তিন-চারদিন ধরে বীজতলা ডুবে থাকায় অনেক স্থানে ধানের চারা পঁচে গিয়েছে। যেগুলো পঁচেনি সেগুলোও পঁচার উপকৃম হয়ছে। পানি না সরলে কৃষকদের ক্ষতির পরিমান বাড়বে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের বন্যায় উপজেলার অনেক কৃষক আমন রোপন করতে পারেনি। এই মৌসুমে আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৫০০ জন কৃষককে প্রণোদনার আওতায় প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে বীজ ধান, বিশ কেজি করে সার প্রদান করা হয়। তবে টানা ভারী বৃষ্টিতে নিমজ্জিত হয়েছে উপজেলার অনেক কৃষকের আমন বীজতলা। উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, ‘কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় আমার তিনটি আলাদা আমন বীজতলা এখন পানিতে নিমজ্জিত। এলাকার দু’টি ব্রিকস ফিল্ডের কারণে এখানে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে এবং শত শত কৃষকের আমন বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার ডুবে যাওয়া বীজতলা পরিদর্শন করেছেন। দুই-তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে না গেলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা চাই উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর ভ‚মিকা রাখবেন।’

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো: আল-আমিন বলেন, কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় বিভিন্ন স্থানে আমনের বীজতলা ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংবাদ পেয়ে মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী গ্রামে ছুটে এসেছি। এখানে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা আটকে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসারকে অবহিত করেছি। স্থানীয় কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মাঠে সরব রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা ও পৌর প্রশাসন। সরানো হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন খালের মুখের মানবসৃষ্ট পানির প্রতিবন্ধকতা। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেন বলেন, ‘বন্যার আশঙ্কায় পানি প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে গত মাসেই তিনটি খাল খনন ও পরিস্কার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বক্ষণিক নিরলসভাবে কাজ করছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews