বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই সর্বপ্রথম একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সংস্কার করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিএনপির সূচনাই হয়েছিল এই সংস্কারের ধারাবাহিকতায়।
শনিবার বিকেলে বগুড়া জেলা বিএনপির আয়োজনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে জিয়াউর রহমান দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জাতি যখন হতাশ ছিল, তখন তিনি আশার আলো দেখান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেন।”
ডা. জাহিদ বলেন, “১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় কুড়িগ্রামের বাসন্তী মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছিলেন। সেই ছবি তুলেছিলেন রশিদ তালুকদার, যিনি আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়েন। বাসন্তী হচ্ছে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আজ দেশে যত চুরি, দুর্নীতি, রিলিফ লুটপাট হয়, তার সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি নাম—আওয়ামী লীগ।”
তিনি দাবি করেন, “জিয়াউর রহমান আজীবন দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। তার সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ এবং স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান। তিনি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখিয়েছেন।”
তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি আজও শক্তভাবে টিকে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপিকে ষড়যন্ত্র করে দমন করা যাবে না। কারণ বিএনপি জনগণের দল। এটি পাকিস্তান, বাকশাল এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।”
১৯৭১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। এছাড়াও, তিনি জেড ফোর্স গঠন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে অংশগ্রহণ, যুদ্ধ-পরবর্তী দায়িত্বশীলতা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয় তুলে ধরেন।
নারী শিক্ষার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বেগম রোকেয়ার পর নারী শিক্ষায় সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন খালেদা জিয়া। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়সহ নানা সংস্কারে তার অবদান অনস্বীকার্য।”
তিনি আরও বলেন, “২০২২ সালে তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যা ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আরও সম্প্রসারিত হয়ে ৩১ দফায় পরিণত হয়। এই কর্মসূচি ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা।”
সভাপতিত্ব ও উপস্থিতি
সভায় সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন।
অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র এড. একে এম মাহবুবর রহমান, সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হাসানাত আলী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন:
কাজী রফিকুল ইসলাম, আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চান, মাহবুবর রহমান হারেজ, ফজলুল বারী বেলাল, এম আর ইসলাম স্বাধীন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, শহিদ উন নবী সালাম, কেএম খায়রুল বাশার, জাহিদুল ইসলাম হেলাল, তৌহিদুল আলম মামুন, শেখ তাহাউদ্দিন নাহিন, মনিরুজ্জামান মনি, এনামুল হক সুমন, নাজমা আক্তার, অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী, জাহাঙ্গীর আলম, আবু হাসান, সরকার মুকুল, রাকিবুল ইসলাম শুভ, হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার, এম আর হাসান পলাশ, আহসান হাবিব মমি, আদিল সাহরিয়ার গোর্কি, এসএম রাঙ্গা ও আতিকুর রহমান রিমন।
Leave a Reply