1. mdmirhossainmolla.bd@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@banglarrup.com : Banglar Rup : Banglar Rup
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসাবে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল রাঙ্গাবালীর চরগংগা আবাসন প্রকল্প ছাউনির টিন রড উধাও দাড়িয়ে আছে খুটি তিন আসামির মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত ১৯ জুলাই বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর মহাসমাবেশ আলোচিত এসি গোলাম রুহানী সাময়িক বরখাস্ত গোয়াইনঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট: ভুগছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল মিডফোর্ডের ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবীতে সৈয়দপুর ও জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা হচ্ছে কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ময়মসিংহে র‌্যাব-১৪ কর্তৃক অভিযানে মাদকসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ০১

রবীন্দ্রজয়ন্তী–কবির বিয়ে যেন ঘটনার ঘনঘটা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫
  • ৯৭ বার

মোঃ বিল্লাল উদ্দিনঃ মৃণালিনী দেবীর বাড়ি খুলনার ফুলতলার দক্ষিণ ডিহি গ্রামে। তাঁর বাবা বেণীমাধব চৌধুরী কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির একজন কর্মী ছিলেন। মাইনে ছিল ১২ টাকা। দিনটি ছিল ১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর। রবীন্দ্রনাথ-মৃণালিনীর বিয়ের তারিখ। ‘এলিজিবল ব্যাচেলর’ রবির বয়স তখন ২২ বছর ৭ মাস। আর মৃণালিনী, প্রকৃত নাম যাঁর ভবতারিণী, তাঁর বয়স ৯ বছর ৯ মাস।

কনে দেখতে রবীন্দ্রনাথ ভাতিজি ইন্দিরা দেবীসহ নিকটজনদের নিয়ে ফুলতলায় গিয়েছিলেন। ইন্দিরা দেবী তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘ছেলেবেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণ ছিল রবিকাকার কনে দেখতে যাওয়া।…বড়োরা ছিলেন-মা, জ্যোতিকাকা মশায়, নতুন কাকিমা, রবিকাকা আর ছোটোদের মধ্যে আমরা দুই ভাইবোন…।’

কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ভাঁড় খেলার বদলে ভাঁড়গুলো উপুড় করে দিতে থাকলেন ধরে ধরে। তখন ছোটকাকিমা ত্রিপুরাসুন্দরী বলে উঠলেন, ‘ও কী করিস রবি? এই বুঝি তোর ভাঁড় খেলা?’ রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘জানো না কাকিমা, সব যে ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমি ভাঁড়গুলো উল্টে দিচ্ছি।’

তবে ঔপন্যাসিক মৈত্রেয়ী দেবী রবীন্দ্রনাথের কাছে শোনা বলে যে সাক্ষ্য উপস্থিত করেছেন, তাতে অবশ্য ভিন্ন তথ্য রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমার বিয়ের কোনো গল্প নেই। বৌঠানরা যখন বড় বেশি পীড়াপীড়ি শুরু করলেন, আমি বললুম তোমরা যা ইচ্ছা করো, আমার কোনো মতামত নেই। তাঁরাই যশোরে গিয়েছিলেন, আমি যাইনি।’

রবীন্দ্রনাথসহ তাঁর চার ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি ছিল খুলনা-যশোর অঞ্চলে। রবীন্দ্রনাথের মা সারদাসুন্দরীর পিত্রালয়ও এই দক্ষিণ ডিহি। কারণ, ‘পিরালি ব্রাহ্মণ’ ঠাকুর পরিবারের বিয়েশাদির জন্য ওই অঞ্চল ছাড়া বিশেষ গতি ছিল না।

বিয়ের কয়েক দিন আগেই বেণীমাধব তাঁর আত্মীয়পরিজন নিয়ে কলকাতায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ে সেই ভাড়া বাসায় হয়নি। বিয়ে হয়েছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতেই। অবশ্য সেই ভাড়া বাসার যাবতীয় খরচা ঠাকুর পরিবার থেকেই দেওয়া হয়েছিল।

এই কাকিমার অনুরোধে বাসরঘরে একটি গান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ‘আ মরি লাবণ্যময়ী, কে ওই স্থির সৌদামিনী…।’ মজার ব্যাপার হলো, কবি গানটি করেছিলেন দুষ্টুমির ছলে। আর স্ত্রীর দিকে নয়, কাকিমার দিকে তাকিয়ে। রবীন্দ্রনাথের এহেন কাণ্ড দেখে কাকিমা তখন জড়োসড়ো। ওড়নায় মুখ ঢেকে মাথা হেঁট করে বসে ছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের বিয়েতে মোট খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ২৮৩ টাকা ৩ পয়সা। এর মধ্যে হীরা ক্রয় করতে লাগে ১ হাজার ৭১২ টাকা। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রভবনে রাখা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের পারিবারিক খরচপত্রের খাতায় কবির বিয়ে উপলক্ষে কোন তারিখে কত খরচ হয়েছে, সব লিপিবদ্ধ আছে।

বিয়ের দিনের দীর্ঘ বর্ণনা আছে ঠাকুর পরিবারের পুত্রবধূ (দ্বিজেন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ) হেমলতা দেবীর লেখায়, ‘সম্প্রদানের পর বরকনে এসে বাসরে বসলেন। রবীন্দ্রনাথের বউ এলে তাঁর থাকবার জন্য একটি ঘর নির্দিষ্ট করা ছিল আগে থেকেই। বাসর বসলো সেই ঘরেই। বাসরে বসেই রবীন্দ্রনাথ দুষ্টুমি আরম্ভ করলেন। ভাঁড়কুলো খেলা আরম্ভ হল, ভাঁড়ের চালগুলি ঢালা-ভরাই হল ভাঁড়কুলো খেলা।’

কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ভাঁড় খেলার বদলে ভাঁড়গুলো উপুড় করে দিতে থাকলেন ধরে ধরে। তখন ছোটকাকিমা ত্রিপুরাসুন্দরী বলে উঠলেন, ‘ও কী করিস রবি? এই বুঝি তোর ভাঁড় খেলা?’ রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘জানো না কাকিমা, সব যে ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমি ভাঁড়গুলো উল্টে দিচ্ছি।’

মৃণালিনী দেখতে কেমন ছিলেন? এটা পাওয়া যাচ্ছে ইন্দিরা দেবীর স্মৃতিকথায়, ‘কাকিমা দেখতে ভালো ছিলেন না, কিন্তু খুব মিশুক এবং পরকে আপন করবার ক্ষমতা ছিল।’ তাঁর মতে, ‘যশুরে’ মেয়েদের এটা সাধারণ গুণ ছিল।

এই কাকিমার অনুরোধে বাসরঘরে একটি গান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ‘আ মরি লাবণ্যময়ী, কে ওই স্থির সৌদামিনী…।’ মজার ব্যাপার হলো, কবি গানটি করেছিলেন দুষ্টুমির ছলে। আর স্ত্রীর দিকে নয়, কাকিমার দিকে তাকিয়ে। রবীন্দ্রনাথের এহেন কাণ্ড দেখে কাকিমা তখন জড়োসড়ো। ওড়নায় মুখ ঢেকে মাথা হেঁট করে বসে ছিলেন।

মৃণালিনী দেখতে কেমন ছিলেন? এটা পাওয়া যাচ্ছে ইন্দিরা দেবীর স্মৃতিকথায়, ‘কাকিমা দেখতে ভালো ছিলেন না, কিন্তু খুব মিশুক এবং পরকে আপন করবার ক্ষমতা ছিল।’ তাঁর মতে, ‘যশুরে’ মেয়েদের এটা সাধারণ গুণ ছিল।

জমিদারির কাজ দেখতে শিলাইদহ গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ ভগ্নিপতি সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়। কবির বিয়ের রাতেই আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। খবরটি জোড়াসাঁকোয় এসে পৌঁছায় পরের দিন। তবে এ জন্য নববধূ মৃণালিনীকে অপয়া বা কুলক্ষণা বলে কথা শুনতে হয়েছিল কি না, তা অবশ্য জানা যায় না।

বিয়ের পর মৃণালিনীর জন্য কেনা হয়েছিল রেশম মাথাঘষা সাবান, নয়ানসুখ কাপড়ের গাউন চারটি, কামিজ ছয়টি ও ইজেরবডি ছয়টি; ঘাগরা, ওড়নাসহ অনেক কিছু।

বালিকা নববধূর সঙ্গে পূর্ণ যুবক রবীন্দ্রনাথের প্রাথমিক সম্পর্ক কেমন ছিল, সে বিষয়ে তেমন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে হেমলতা দেবীর লেখা থেকে মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ শুরু থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে একটা স্নিগ্ধ কৌতুকের সম্পর্ক তৈরিতে সচেষ্ট ছিলেন।

বিয়ের তিন মাস পরের কথা। মৃণালিনী যাচ্ছিলেন জ্ঞানদানন্দিনীর সঙ্গে কলকাতা মিউজিয়ামের একটি প্রদর্শনী দেখতে। বিদ্যাশিক্ষার জন্য বিয়ের এক মাস পর রবীন্দ্রনাথের এই বউদির বাড়িতেই মৃণালিনীকে পাঠানো হয়েছিল। হেমলতা লিখেছেন, ‘বাসন্তী রঙের জমিনে লাল ফিতের ওপর জরির কাজ করা পাড় বসানো শাড়ি পরেছেন কাকিমা। বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। সেই রোগা কাকিমা দিব্যি দোহারা হয়ে উঠেছেন তখন। রবীন্দ্রনাথ কোথা এসে জুটলেন সেই সময় হাতে একটা প্লেটে কয়েকটা মিষ্টি নিয়ে খেতে খেতে। কাকিমাকে সুসজ্জিত বেশে দেখে দুষ্টুমি করে গান জুড়ে দিলেন তাঁকে অপ্রস্তুত করবার জন্য, “হৃদয়কাননে ফুল ফোটাও, আধো নয়নে সখি চাও চাও।” এই দুটি লাইন গেয়ে আরও সুর চড়িয়ে গাইলেন, ‘ধীরে ধীরে আমার প্রাণে এসো হে, মধুর হাসিয়ে ভালোবেসো হে!’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews