1. mdmirhossainmolla.bd@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@banglarrup.com : Banglar Rup : Banglar Rup
বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

মানুষকে বাস করতে হয় খুব মানবেতর পরিবেশে

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১২ বার

ফারুক আহমেদ পৃথ্বীঃ হঠাৎ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বেড়ে গেছে রোগীর চাপ। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছে, অধিকাংশের বয়স এক বছরের নিচে। ভর্তিকৃত রোগীদের অর্ধেকের বেশি আবার শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ নিউমোনিয়া এবং ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত। এছাড়া জ্বর নিয়েও ভর্তি করা হয়েছে অনেক শিশুকে।

চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে প্রায় সময় রোগীর চাপ থাকে। তবে এখন তা আগের তুলনায় বেড়েছে। এই সময় জ্বর, সর্দি–কাঁশি ছাড়াও ব্রঙ্কিওলাইটিস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে। আমাদের দেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। সাধারণত যেসব শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, তাদের নিউমোনিয়া বেশি হয়। এছাড়া প্রি–ম্যাচিউরড (সময়ের আগে জন্ম নেয়া) শিশুদেরও নিউমোনিয়া বেশি হয়। পর্যাপ্ত আলো বাতাস ছাড়া স্যাতস্যাতে পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশু নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এ চিকিৎসক বলছেন, নিউমোনিয়া প্রতিরোধে শিশু জন্মের পর থেকে ৬ মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বুকের দুধে নিউমোনিয়া প্রতিরোধক ভিটামিন এ থাকে। ফিডারে কোনো কিছু খাওয়ানো যাবে না। নিয়মিত হাত ধোঁয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ঘরে বড় কারো সর্দি কাশি হলে শিশুদের তাদের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে। এছাড়া শিশুকে সরকার নির্ধারিত সব টিকা দিতে হবে।
শিশুরোগ চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় মা–বাবারা বুঝতে পারেন না, তার শিশুর শারীরিক অবস্থার খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশুর সর্দি– কাঁশিকে বেশিরভাগ অভিভাবক অবজ্ঞা করেন। পরে এক সময় সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জ্বর–খিচুনি, নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত হয় বিভিন্ন বয়সী শিশুরা।
অপরদিকে চমেক হাসপাতাল ছাড়াও নগরীর আগ্রাবাদ মা–শিশু জেনারেল হাসপাতালেও একই অবস্থা। সেখানেও বেড়েছে রোগীর চাপ। শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে রোগীর ঠাঁই নাই অবস্থা। এক বেডে তিনজন শিশুকেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের দুই ইউনিটে অনুমোদিত বেড রয়েছে ৭৪টি। অথচ বৃহস্পতিবার ভর্তি রোগী ছিল প্রায় ৪০০ জন।
শিশুরা এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ায় মানুষকে বাস করতে হয় খুব মানবেতর পরিবেশে। এরফলে শিশুরা নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস ও সংক্রামক রোগে ভুগে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত টিকাদান, স্বাস্থ্যকর জীবন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এই তিনটি বিষয় নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। অনেক অভিভাবক অজ্ঞতার কারণে অসুস্থ শিশুকে সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে যান না। সময়ক্ষেপণ করার পর যখন অবস্থার অবনতি হয়, তখন হাসপাতালের দিকে ছুটেন। তাই শিশুর অসুস্থতাকে কোনোভাবে অবহেলা করা যাবে না। চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল করার কথা। এটা নির্মিত না হলে বৃহত্তর চট্টগ্রামে শিশুদের চিকিৎসার সংকট থেকে যাবে। লেখকঃ ফারুক আহমেদ পৃথ্বী/ সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews