রাসেল আদিত্য,স্পোর্টস ডেস্ক।।
অল্পের জন্য ফুটবল ইতিহাসের সেরা কামব্যাকের ইতিহাসটা লিখতে পারলোনা ফ্রান্স।ম্যাচের এক তৃতীয়াংশ সময় পর্যন্ত মনে হচ্ছিল,গোলবন্যায় ভেসে যাবে ফরাসিরা,কিন্তু ৬০ মিনিট থেকে শুরু হওয়া ফিরে আসার গল্পটা শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পেলোনা।তাই শেষ পর্যন্ত ৫-৪ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে পর্তুগালের মুখোমুখি হতে চলেছে স্পেন।
স্পেনের অসাধারণ পারফর্মেন্স ছিল বলা যায় ম্যাচের প্রথমার্ধে।কিন্তু পরিসংখ্যান আপনাকে বিভ্রান্ত করতেই পারে।ম্যাচের ৫৭ শতাংশ বলের দখল ছিলো ফরাসিদের পায়ে।গোলের জন্য ২৪ টি শটের ভেতর অন টার্গেটে ছিলো ৯ টি।পক্ষান্তরে ৪৩% বলের দখল রাখা স্পেন ১৬ শটের ভেতর ৮ টি রেখেছে অন টার্গেটে।তন্মধ্যে ৫ টি গোল বের করে নিয়েছে।
ম্যাচের ২২ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের সৌজন্যে এগিয়ে যায় স্পেন।রিয়াল সোসিয়াদের উইঙ্গার মিকেল ওয়ার্জাবালের দুর্দান্ত এসিষ্ট থেকে উইলিয়ামসন গোল করে স্পেনকে ১-০ তে লিড এনে দেন।এর তিন মিনিট পরে, আর্সেনালের মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।যাকে এবার ওয়ার্জাবাল সেট আপ করেছিলেন।২-০ তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধের কয়েক মিনিট ম্যাচটি ভিন্ন মাত্রা পায়,
পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ফলে।কিন্তু ৫২ মিনিটে স্পেনের একটি আক্রমন ঠেকাতে গিয়ে পেনাল্টি এরিয়ার ভেতরে অ্যাড্রিয়েন রাবিওট লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন।পেনাল্টির বাঁশি শুনে ১৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ বিষ্ময় নিজেই গোল করতে এগিয়ে যান এবং ৩-০ গোলে এগিয়ে নেন স্পেনকে।
দুই মিনিট পার না হতেই বার্সেলোনার সতীর্থ পেদ্রি নিকোর সাথে পাস বিনিময় করার পর ম্যাচের চতুর্থ গোলটি করে ৪-০ তে এগিয়ে নেন দলকে
৬০ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদের স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পের সৌজন্যে ফ্রান্স পেনাল্টি থেকে একটি গোল করে ব্যবধান ৪-১ করার কিছুক্ষণ পরেই তথা ৬৭ মিনিটে লামিনে ইয়ামাল আবারও গোল করে ৫-১ ব্যবধান করেন।বার্সেলোনার এই খেলোয়াড় লেঙগেষ্টের সাথে বল দেওয়া নেওয়া শেষে মাইনানকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন।
স্প্যানিশরা রীতিমতো জয়োল্লাস শুরু করে দিয়েছিলো গ্যালারিতে।তখন কে জানতো পরবর্তী ২৩ মিনিট কতো রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছে?
৭৯ মিনিটে রায়ান চেরকি দুর্দান্ত ভলি নেন বক্সের বাইরে থেকে।ছবির মতো বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। ৫-২ ব্যবধান হয়।
কিছুক্ষণ পরেই্ ৮৫ মিনিটে ফ্রান্সের সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে বদলি খেলোয়াড় দানি ভিভিয়ান নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন।৫-৩ হওয়ার পর তো রীতিমতো চরম আগ্রাসী হয়ে ওঠে ফ্রান্স।যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে চেরকির মাপা ক্রস থেকে দূর্দান্ত হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন কোলো মুয়ানি।৫-৪ এ হওয়ার পর অনেক ফুটবলপ্রেমি চাইছিলেন,সমতাসূচক গোলটি হোক।কিন্তু সম্মিলিত চেষ্টায় বাকি সময়টা তাঁরা ফরাসিদের সকল প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সমর্থ হয়।২০২৩ সালের পুনরাবৃত্তি করার লক্ষ্যে ৮জুন পর্তুগালের মুখোমুখি হবে স্প্যানিশরা।
অন্যদিকে আগামীকাল ৭ জুন দুই ভগ্ন হৃদয়ের দল জার্মানী ও ফ্রান্স লড়বে তৃতীয় স্থানের জন্য।
Leave a Reply