রাসেল আদিত্য: নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গত বছর ২৭ ডিসেম্বর কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া হোসিয়ারি শ্রমিক ফারুক হত্যা মামলায় জড়িত পাঁচ কিশোরকে আটক করেছে র্যাব-১১।আজ ২৭ মে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১১’র প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আটককৃতরা হলো,সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল চৌধুরীবাড়ী এলাকার আল আমিনের ছেলে মো. তামীম (১৬),গোদনাইল সৈয়দপাড়া এলাকার মৃত মকবুলের ছেলে রবিউল আউয়াল (১৬), শাহ আলমের ছেলে মুহাম্মদ রিফাত (১৬),একই এলাকার মৃত সাধুল্লার ছেলে সাদ্দাম (২১), এবং চৌধুরীবাড়ী বৌবাজার এলাকার মাসুদ রানার ছেলে শান্ত (১৭)।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়,নিহত ফারুক স্থানীয় একটি হোসিয়ারি ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।পূর্ব শত্রুতার জেরে গ্রেপ্তারকৃত আসামী আনাসের সাথে ফারুকের সিনিয়র জুনিয়র(ছোট ভাই-বড় ভাই)নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল।এরপর প্রায় সময়ই আনাস ও তার সহযোগীরা ফারুককে হুমকি-ধামকি দিতো।এক পর্যায়ে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত ৮টার দিকে গ্রেপ্তার আসামী আনাস সহ আরও ৭/৮ জন কিশোর গ্যাংয়ের উঠতি সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র তথা ধারালো চাপাতি, ছুরি, লাঠি-সোটা নিয়ে রাস্তায় ওঁত পেতে থাকে।
ফারুক তার কর্মস্থল থেকে নিজের বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই তার গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়।তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।এই হামলার ঘটনার একটি রোমহষর্ক সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে।
এরপর স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় ফারুককে প্রথমে স্থানীয় খাঁনপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়।অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ২৮ ডিসেম্বর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।কিন্তু টাকার অভাবে সামান্য চিকিৎসা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ফারুক ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।
এ ঘটনায় ফারুকের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়।বাড়িতে আসার পর ফারুকের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে তাঁকে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুকের মৃত্যু হলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।পরবর্তীতে র্যাব-১১ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি যৌথ দল গত ২৬ মে সোমবার দিবাগত রাত থেকে শুরু করে মঙ্গলবার ভোর রাত পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আরামবাগ, চৌধুরীপাড়া ও বউবাজারে অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখিত পাঁচজনকে আটক করে।তাঁদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এই হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব-১১।
Leave a Reply