1. mdmirhossainmolla.bd@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@banglarrup.com : Banglar Rup : Banglar Rup
বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুমিল্লার কারাগারে জুতার ভেতর ৯১ গ্রাম গাঁজা আত্মীয়কে দিতে গিয়ে শান্ত নামের এক যুবক আটক কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক ইভ্যালির এমডি রাসেল ও তার স্ত্রীর ৩ বছরের কারাদণ্ড সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের ৪ দিনের রিমান্ড টেলিকম সিন্ডিকেটে অর্থ লোপাট: ৬২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আইওএফ চক্র কালীগঞ্জে বিদ্যুৎ কর্মীদের অবহেলায় প্রাণ গেল শিশুর কুমিল্লা বোর্ডে এবার এসএসসিতে ঝরে পড়েছে ২৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী গাজায় ইসরায়েলী আগ্রাসনের প্রতিবাদে কুমিল্লায় ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল কেএফসিকে ইসরাইলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে ক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর কালীগঞ্জে মাদক বিরোধী অভিযানে ইয়াবা ও চোলাই মদসহ দুই মাদক কারবারী গ্রেফতার

আবরার তবুও মৃত্যুতে স্বীকৃতি পেয়েছে, আমি কি পেয়েছি?

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
  • ২৩ বার

রিয়াজ রাব্বী,ক্যাম্পাস প্রতিনিধি(রুয়েট): রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়(রুয়েট)- এ ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৮ই মার্চ রাত ১০:৪৫টায় ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে একটি পরিকল্পিত হামলা চালায়। সেই নৃশংস হামলায় অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হলেও,রুয়েটের গ্লাস এন্ড সিরামিক ইন্জিনিয়ারিং(জিসিই) বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের(১৪সিরিজের) এনামুল কবীর রাজনকে মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ঠেলে দেওয়া হয়, আর প্রায় এক মাস আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে হয়েছিল। চারটি মেজর অপারেশনের পরেও সেই নৃশংসতার ক্ষত সে এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে এবং হয়তো সারাজীবন তা বহন করতে হবে।

২০১৯ সালে বুয়েটের আবরার ফাহাদকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তাকেও ঠিক একইভাবে মারধর করা হয়েছিল। পার্থক্য কেবল একটাই—আবরার মারা গেছে, আর রাজন আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে আছে।
রাজন তার ফেসবুক পোস্টে বলেন,”আবরার তবুও তার মৃত্যুতে একটা স্বীকৃতি পেয়েছে, কিন্তু আমি কি পেয়েছি?
একজন সাধারণ, নিরপেক্ষ শিক্ষার্থী হিসেবে কি রুয়েটের কাছে এই নৃশংসতার বাইরে আর কিছুই আমার প্রাপ্য ছিল না? বিগত কয়েক বছর ধরে এই গ্লানি আর ক্ষোভ নিয়ে আমি প্রতিটি দিন কাটিয়েছি, বাধ্য হয়েছি নীরব থাকতে। তবে আজ সৃষ্টিকর্তা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন আমার ওপর হওয়া এই নির্মম অন্যায় নিয়ে কথা বলার।হামলার সময় আমি আমার কক্ষে ছিলাম অর্থাৎ
হামিদ হলে আমি আমার কক্ষে বসে ল্যাপটপ চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে আমি ভীত হয়ে দ্রুত পাশের রুমে আশ্রয় নিই, কারণ আমার রুমের লকার দুর্বল থাকায় তখন সেটি তুলনামূলকভাবে নিরাপদ মনে হচ্ছিল। সেখানে পৌঁছে দেখি, অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়েছে কিছুক্ষণ পর হামলাকারীদের একটি অংশ দরজা-জানালা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করে এবং কক্ষে অবস্থান রত দুইজনকে নির্মমভাবে মারধর করে। এরপর, হামলাকারীরা আমাকে দেখে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং তাদের একজন ছাত্রলীগ ক্যাডার সিভিল ১৫ এর ইশতিয়াক আমাকে লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করে হল ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি হল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু নিচে এসে দেখি, একজনকে নির্মমভাবে পিটানো হচ্ছে এবং হল এর এক্সিট গেইট বন্ধ করে রাখছে । এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমি আতঙ্কিত হয়ে বাথরুমে আশ্রয় নিই।
বাথরুমে গিয়ে দেখি, সেখানে আগেই হামলাকারীদের ২/৩ জন অবস্থান করছে। তারা আমাকে দেখে কোনো কথা না বলে চলে যায়। কিন্তু মিনিটখানেক পর তারা আরও ৫-৬ জনকে নিয়ে ফিরে আসে এবং কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই লোহার রড দিয়ে আমার মাথা, হাত ও পায়ে নির্মমভাবে আঘাত করতে থাকে এবং ছাত্রলীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইইই ১৬ এর জাবির আমাকে পিটানো অবস্থায় জিজ্ঞেস করে সিয়াম, আতাউর কই? আমি কিছু বলতে পারিনি, প্রায় ৩০ মিনিট ধরে পালাক্রমে আমাকে পেটানো হয়। সিয়াম ও আতাউরকে মারতে পারেনি কারণ তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে সমস্ত আক্রোশ আমার উপরেই গিয়ে পড়ে।
এরপর দুজন আমাকে গেটের সামনে নিয়ে যায় আর আশ্চর্যের বিষয় পুলিশবাহিনী সেখানে দাঁড়িয়ে আছে ছাত্রলীগকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। এরপর আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি সেন্স হারিয়ে ফেলি।

হামলা এবং নির্যাতনের পুরো চিত্র তুলে ধরা সম্ভব না হলেও, হামলা এবং এর পেছনের মাস্টারমাইন্ডরা যারা রুয়েটকে একপ্রকার নরকে পরিণত করেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন:

রসায়ন বিভাগের শিক্ষক সিদ্ধার্থ শংকর সাহা:
হামলার সময় পুলিশ বাহিনী সঙ্গে নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন ছাত্রলীগ বাহিনীকে নিরাপত্তা দিয়ে তাদের নিরাপদে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি ছিলেন আমার উপর হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। রুয়েট ছাত্রলীগের সাদি মুহম্মদ তানজিম যখন অনবরত আমার পেটে লাথি মারছিল, তখন পুলিশ পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজও আমার কাছে দেওয়া হয়নি বরং তা কৌশলে আমার কাছ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তপু চৌধুরী (রুয়েট ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক):
আমার উপর হামলার চালানোর পর কোনো সমবেদনা তো দূরে থাক উল্টো সেটাকে পুঁজি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং সেই টাকা ছাত্রলীগের কিছু বিপদগামী সদস্যরা নেশা করে , শেষ করেছে।আমি ছিলাম ওদের কাছে টাকা হাতানোর মাধ্যম মাত্র। এসব টাকা সেলিম হল, শহীদুল্লাহ হল, শেখ মুজিব হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে আদায় করেছিলো এবং আমি যাতে রুয়েট থেকে বের হইতে না পারি তার জন্য বিভিন্ন সময় পরীক্ষা সামনে আসলেই শিক্ষার্থীদের ফোর্স করে পরীক্ষা পিছানোর পোস্ট করাতে বাধ্য করতো।পরীক্ষা পিছানোর মূল মাস্টারমাইন্ড ছিলো এই তপু চৌধুরী।

মজার ব্যাপার হলো হামলার পরপরই আমার পরিবারকে মিথ্যে জানানো হয়েছিল যে আমি সুস্থ আছি।হামলার আগে আমার সাথে কারও কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ছিল না, সিভিল ‘১৫ এর ইশতিয়াক (ছাত্রলীগ এর কুখ্যাত ক্যাডার যার পৈতৃক বাড়ি নেত্রকোনায়) এসেছিলো আমার উপর এই হামলার নেতৃত্ব দিতে।

নিবিড় (ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি):
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে অস্ত্র ভাড়া করে এনে সাদি, তুষার, জাবির, রাহাত, ইপু, আসিফদের দিয়ে হামলা করায়। হামলার আগেই মতিহার থানা পুলিশকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করা হয়
ফলে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়। গ্রুপের যারা হলে থাকতো তাদের কে হুমকি দিয়ে নিবিড় টাকা আদায় করতো, টাকা না দিলে তাদের উপর মামলা হবে,এই করবে সেই করবে হুমকি দিতো।

প্রশাসনের নিরবতা:
তৎকালীন ভিসি রফিকুল ইসলাম বেগ কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং আমাকে পাল্টা হুমকি দেওয়া হয় এবং সিদ্ধার্থ শংকর সাহা আমাকে এবং আমার পরিবারকে নিরব থাকার পরামর্শ দেন। কোনো ক্ষতিপূরণ আমি পাইনি।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অর্থের বিনিময়ে হামলার মীমাংসা করা হয় কিন্তু আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।আমার উপর হামলার বিষয়ে কোন আলোচনা করেনি এবং সব কিছু ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।

এই নৃশংসতা থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীরা কি মুক্তি পেয়েছে?? নাকি এখনও চলমান??
জানতে চাই।”

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews