মোসা: রিমি ইসলাম: রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : রাজধানীর সূত্রাপুরের কাগজিটোলায় গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার একই পরিবারের পাঁচজন মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভ্যানচালক রিপন প্যাদা সব শেষে (৩৫) মারা যান।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘বিস্ফোরণে দগ্ধ পাঁচজনের মধ্যে এ পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইসিইউতে মারা যান রিপন মিয়া। তার শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।’
বাকি যারা আগেই মারা গেছেন তারা হলেন, রিপনের ছেলে রোকন (১৪), তামীম (১৮) এবং মেয়ে আয়শা (১)। রিপনের স্ত্রী চাঁদনী আক্তার (৩৫) মারা গেছেন বুধবারে। তাদের সবাইকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত করা হলেও আর ছোট মেয়ে আয়শাকে ঢাকার আজিমপুরে কবরস্থ করা হয়।
নিহত সকলের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নেতা বাজার সংলগ্ন যুগির হাওলা গ্রামে।
জানা গেছে, গত ১০ জুলাই দিবাগত রাত ১টার দিকে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের কাগজিটোলা এলাকায় একটি বাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধদের প্রথমে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত রিপনের মা জরিনা বেগম (৬৩) বলেন, “রিপনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল ঘটনার দিন। ও আমাকে ঢাকায় বেড়াতে যেতে বলছিল। আমার জন্য ঈদে কাপড় কিনেছিল। আমাকে দিতে পারেনি বলে রিপনও ঈদে নিজের জন্য কিছু কেনেনি। বলেছিল ঢাকায় গেলে আমাকে আম খাওয়াবে। রোজার আগে ওকে শেষবার দেখেছি, আর আজ মরদেহ দেখলাম।” — স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বুকে পাথরের মতো ব্যথা চেপে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নিহত চাঁদনী আক্তারের বড় ভাই শামীম মীর (৩৭) বলেন, “আমার বোন দগ্ধ ছিল। আইসিইউতে ভর্তি ছিল। চিকিৎসকরা আমাদের কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি। তাই আমরা হাসপাতাল থেকে তার নাম কেটে নিয়ে আসি।”
Leave a Reply