নিজস্ব প্রতিবেদক : বন ও পরিবেশ উপদেষ্টার সম্ভাব্য লামা সফরের গুজবকে হাতিয়ার করে তাঁতী লীগ নেতা আদিল আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিক পরিচয়ে স্থানীয় লামা- আলীকদম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত আদিল আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইটভাটা মালিক, বালি ব্যবসায়ী,জোত মালিক ও কাঠ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আমলাদের কে সহ জিম্মি এবং ব্ল্যাকমেল করে মোটা অংকের অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে ।

বেশ কিছু দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা চৌধুরীর লামা সফরের একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই খবরকে পুঁজি করে আদিল আহমদ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি নিজেকে বিভিন্ন সময়ে ‘কালের কণ্ঠ’, ‘আমার সংবাদ’ ও ‘দৈনন্দিন পত্রিকা’-র লামা প্রতিনিধি এবং পরিবেশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের ফোন করা শুরু করেন।

আদিল আহমদ চৌধুরী ব্যবসায়ীদের ফোনে বলেছেন, বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা চৌধুরী লামা সফরে আসবেন এ খবরটা আপনারা জানেন সৈয়দা রেজওয়ানা চৌধুরীর সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। উনি যদি লামা আসেন, আমি আপনাদের কী করতে পারি, এ ব্যাপারে আপনাদের ধারণা আছে নাকি বলে হুমকি দিয়ে কথা বলেন বলে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা দাবি উপস্থাপন করেন, এমন ভয়ভীতি ও হুমকি দেখিয়ে আদিল তাদের কে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

লামা জোত মালিক ও কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির নাম না বলা এক সদস্য বলেন সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া আদিল আহমদ চৌধুরী আমাকে বিভিন্ন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলে, জোত ও কাঠ ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে তাকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। অন্যথায় লামা-আলীকদমে কীভাবে জোত পারমিট হয়, আমি দেখে নেব বলে হুমকি প্রদর্শন করেন।

লামার ফাঁসিয়াখালীর মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কালু সওদাগর বলেন আমি একসময় এক বালি ব্যবসায়ীর সাথে শেয়ারে ব্যবসা করার সময় আদিল আহমেদ চৌধুরী আমার কাছ থেকে প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা করে চাঁদা নিত। এছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে মাসোয়ারা (মাসিক চাঁদা) নেয়। সম্প্রতি বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা লামা আসবেন এমন খবর ছড়িয়ে সে আবার আমাদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে।

লামা বন বিভাগের সাবেক সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা আতা ইলাহি বলেন আমি লামা বন বিভাগে কর্মরত অবস্থায় আদিল আহমদ চৌধুরী আমার কাছ থেকে ও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছিল । এক পর্যায়ে আমি দিতে অস্বীকার করায় সে আমাকে ও তৎকালীন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ‘দৈনন্দিন পত্রিকা’য় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে মান ক্ষুণ্ণ করে ।
পাশাপাশি বর্তমান সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ দায়ের করে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আদিল আহমদ চৌধুরী বন বিভাগসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে চিঠি দিয়ে এবং ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

৫ আগস্টের পরে আওয়ামী ডেভিল তাঁতী লীগ নেতা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জোত মালিক বালি ও ছোট খাট কাঠ ব্যবসার সাথে জড়িতদের নিয়মিত টার্গেট করতেও দেখা গেছে। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও আদিল আহমদ চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তাকে একাদিক বার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ও ফোন সুইচ বলে।

এই ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও তাঁতী লীগ নেতা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে কীভাবে এ ধরনের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিষয়টি সম্পর্কে কী জানে বা তারা কোন ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই ঘটনায় লামা এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা।