মোসা. রিমি ইসলাম/রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা রাঙ্গাবালীর বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মোল্লার চর গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ২০২১ সালে শুরু হওয়া সাম্মাম (একজাতীয় বিদেশি ফল, যা দেখতে তরমুজের মতো) চাষে মিলছে অভাবনীয় সাফল্য। একসময় যে জমি পানির নিচে থাকত, হতো না কোনো ফসল আজ সেখানে এখন কৃষকেরা স্বপ্ন বুনছেন এই নতুন ফসল নিয়ে।
স্থানীয় কৃষক মো. আলী আক্কাস মোল্লা জানান, আমি এই প্রথম ৩৫ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষ করেছি। সব টুকু জমি পরিত্যক্ত ছিল,কোনো ফসল হতো না। প্রথমই আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন হয়েছে। আশাকরি আবহাওয়া ভালো থাকলে লাভবান হব।
আরেক কৃষক মো. তোফায়েল মৃধা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সাম্মামের ফলন অনেক ভালো। দামও মোটামুটি ভালো। আমরা পাকা সাম্মাম ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে এবং গোলা সাম্মাম ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
তিনি জানান, আমাদের এলাকায় আগে এই ফলের নাম কেউ জানত না। এখন অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ফলন ও দামে লাভজনক হওয়ায় আমরা এই ফল চাষে আরও আগ্রহী।
তবে কৃষকদের আক্ষেপ, সরকারিভাবে তারা এখনো কোনো সহযোগিতা পাননি। প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, কীটনাশক কিংবা বাজারজাতকরণ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কেউ দিচ্ছে না।
তারা বলেন, যদি সরকারিভাবে সহায়তা, প্রযুক্তি ও পরামর্শ দেওয়া হয়, তাহলে উপকূলীয় এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব। সাম্মাম চাষ হতে পারে অর্থনৈতিক মুক্তির একটি বড় দিক।”
স্হানীয় কৃষকদের এই উদ্যোগ যদি সঠিকভাবে সমর্থন ও সম্প্রসারণ করা যায়, তবে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষির এক নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচার কম্পিটিটিভনেস প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে প্রথমবারের মত উপজেলায় অফসিজন সাম্মাম চাষাবাদ হয়।
পরবর্তী বছরে উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ও বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে অফসিজন সাম্মাম চাষ শুরু করে। চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ১২ হেক্টর জমিতে সাম্মাম আবাদ আছে।
প্রকল্পের অর্থয়নে যত টুকু সহযোগিতা করার তা আমরা করে যাচ্ছি, এছাড়াও প্রশিক্ষণ ও উচচমূল্য ফসল চাষ বিষয়ক কৃষকদের ধারণা দেওয়া।নতুন উদ্যোক্তা ও আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়।রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা অফসিজন সাম্মাম চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
মোসা. রিমি ইসলাম
রাঙ্গাবালী ( পটুয়াখালী ) সংবাদদাতা
মোবাইল ০১৬০৯৬৯৫৪৩৭
Leave a Reply