নিজস্ব প্রতিবেদক: অশেষ দুঃশাসনের পেছনে লুকিয়ে থাকা অমানুষ, ভইরা দে গ্রুপের প্রধান কিশোর গ্যাং আশিককে আজ সেনাবাহিনীর অগ্নিঝরা অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাফরুল থানাধীন সেকশন-১৩, ব্লক-বি এর একটি ফ্ল্যাট থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ সালে রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যেই ভইরা দে গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আগ পর্যন্ত বহাল তবিয়তে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল, কিন্তু আজকের এই অভিযান তাদের দাপটকে সম্পূর্ণ রূপে অবশ্যম্ভাবী মুখে ঠেলে দিয়েছে। আশিক যখন ভবনের ৭ তলায় লুকিয়ে ছিল, তখন সেখান থেকে পালানোর চেষ্টায় সে পাইপের মাধ্যমে অবসর নেওয়ার প্রলোভনে পড়ে, কিন্তু সেনাবাহিনীর আঁটসাঁট নজরদারি তাকে পালাতে দেয়নি; বরং বাধ্যকরে তাকেসহ গ্রুপের আরও সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে আশিকের দুর্বৃত্তপনার সময় এসে সে ছাদের উপর থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে, যা তার জন্য আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছে।
আশিকের অপরাধের তালিকা দীর্ঘ, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সঙ্গেও সে বিরাজমান ছিল। ৫ আগস্টের পর সে ভাসানটেকের নটোরিয়াস সন্ত্রাসী কালা ইব্রাহিমের নির্দেশনায় বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। মিরপুর মডেলসহ বিভিন্ন থানায় অস্ত্রের হরণ আশিকের বাহিনীর কাছে রয়েছে, যা দিয়ে সে নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে, সমাজকে আতঙ্কিত করেছে।
গোয়েন্দা সূত্র: ভাষানটেক ও বাউনিয়াবাধকে নিদ্রিক ভয়ঙ্কর কিশোর গ্যাং মদদদাতা। অভিযোগ রয়েছে, ভাষানটেকের জহির কমিশনারের ভাই ‘পাগলা মামুন’, বিএনপি নেতা রূপচান, সাবু, মামুনের ভাগ্নে মানিক এবং কুখ্যাত কিশোর গ্যাং লিডার আশিক পল্লবী ও মিরপুর মডেল থানার ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে গচ্ছিত সরকারি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। ১০ থেকে ১২টি অস্ত্র এখনো আশিক বাহিনীর কাছেই রয়েছে। এরা পলাতক বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে ভাড়ায় খাটে। মিরপুর ১০ হোপের গলিতেও সড়ক মার্কেটে অস্ত্র মহড়া দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করেছে ও চুরি দিয়ে কুপিয়েছে।
বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত, আশিক চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং খুনের মতো নৃশংস কার্যকলাপে যুক্ত হয়ে এলাকাজুড়ে শোষণের প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত ছিল। তার বাবা, খালেকুজ্জামান জীবন, যুবলীগের পদধারী নেতা, সন্ত্রাসের ঐতিহ্যকে অস্তিত্বে রাখার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ঘটনার ফলে আশিকের গ্রেফতারের খবর এলাকাবাসীর মধ্যে সম্ভাবনার আশ্বাস সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে। গরিব অসহায় ও ব্যবসায়ীরা নামাজ পড়ে সেনাবাহিনীর সাহসিকতা ও ইতিবাচক ভূমিকারজন্য দোয়া করেছে।
একটি নতুন সূচনার দিকে এই অভিযানকে একটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন, এবং প্রশাসন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে অভিযুক্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পল্লবীর কিশোর গ্যাং লিডার আশিক গ্রেফতার হয়েছে ভাষানটেক এলাকায় সেনাবাহিনীর হাতে। ভবন থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে জখম হয়। এখন চিকিৎসাধীন আছে।
Leave a Reply