মীর হোসেন মোল্লাঃ আগামী ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা জুড়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। জেলার ১১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি। তবে একেবারে বসে নেই জামায়াত ইসলামী। জেলার ১১টি সংসদীয় আসনে বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি বেশ চাঙা। প্রতিটি আসনেই বিএনপির শক্ত অবস্থান রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সম্প্রতি কুমিল্লার রাজনীতিতে জামায়াত ছিল কোণঠাসা। দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি চলেছে অনেকটা ‘গোপনে’। গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেখা মিলে জামায়াতের। তবে রাজনৈতিক মাঠে এখন সক্রিয় বিএনপি। জানা গেছে, কুমিল্লার সবকটি আসনের মধ্যে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক আনন্দ উদ্দীপনা প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে। চৌদ্দগ্রাম বিএনপির আহবায়ক মোঃ কামরুল হুদাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে- এ আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দিতে, জেলা নেতাকর্মীরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
সূত্র বলছে, কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তাব অনুযায়ী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সঙ্গে সদর দক্ষিণ উপজেলাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষাধিক ভোটারের বিশাল এই চৌদ্দগ্রামের সঙ্গে- সদর দক্ষিণকে সংযুক্ত করায়, বিএনপির প্রার্থীর বিজয় শতভাগ নিশ্চিত হলেও- জামায়াত ইসলামীর নায়েবের আমীর ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের এখন কোনঠাসা হয়ে পড়বে।
এদিকে, সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাবের প্রতিবাদে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সকল শ্রেনী পেশার মানুষ, প্রস্তাবিত খসড়ায় সংসদীয় আসনের তালিকায় চৌদ্দগ্রামের সঙ্গে সদর দক্ষিণকে সংযুক্ত করায়, পুরো চৌদ্দগ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারন মানুষ বলছে কুমিল্লা-১১ সংসদীয় আসন আগের মতো, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নিয়েই বহাল রাখতে হবে। তা না হলে দক্ষিণ চৌদ্দগ্রামের ভোটারদের ভোটে জামায়াত প্রার্থী ডাঃ তাহের জামানত হারানোর সম্ভাবনা বেশী বলে মন্তব্য করছেন সাধারন ভোটাররা। যার ফলে দলীয় নেতাকর্মীরা এনিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দিয়েছেন।
অপর দিকে, সীমানা পরিবর্তনের পর কুমিল্লার ১১টি সংসদীয় আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে- কুমিল্লা-১১ আসন থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মোঃ কামরুল হুদাকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তাব প্রাথমিকভাবে চুড়ান্ত হয়েছে। গতকাল দলীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, চৌদ্দগ্রাম বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা বুলেটের চেয়েও দ্রুতগতিতে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে, কুমিল্লা জেলাব্যাপী এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ কামরুল হুদা গোটা জেলার সবকটি উপজেলার তুলনায় চৌদ্দগ্রাম বিএনপির রাজনীতির অঙ্গনে ব্যাপক গনজোয়ার সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশ্বস্ত এবং আস্তাভাজন ব্যক্তি- চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ কামরুল হুদা- আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের পরাজিত করে, ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য, দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠ সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছেন।
বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে চৌদ্দগ্রামের জামায়াত নেতারা প্রতিটি গ্রামে বিরিয়ানির দাওয়াত দিয়ে- এলাকার সহজ সরল মহিলাদেরকে টার্গেট করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, ইসলামের নামে দলীয় আলোচনা সভার আয়োজন করে আসছে। ২রা আগস্ট বিকেলে মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বারাইশ মধ্যমপাড়া জামায়াত নেতা হালিমের বাড়িতে একটি বিরিয়ানির দাওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে। সূত্র জানায়, মহিলাদের হাতে একটি বিরিয়ানির প্যাকেট তুলে দিয়ে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ইসলামের নামে কয়েকটি বয়ান শুনাইয়ে, মহিলাদের মন দুর্বল করার পর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জামায়াত প্রার্থী ডঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ওয়াদা করায়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা এক মহিলা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, এটা জামাতিদের একটা নির্বাচনী কৌশল। তিনি বলেন, এত বছর বিরিয়ানির প্যাকেট কোথায় ছিল? বিরিয়ানির দাওয়াতের নামে জামায়াত নেতারা ইসলামের দোহাই দিয়ে পাল্লা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য মহিলাদের ব্রেইন্ড ওয়াশ করার একটি কৌশল অবলম্বন করেছে।
Leave a Reply