মোঃ রবিউল মুন্সী: দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঐক্য, সংহতি ও পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বানে রাজধানীর পুরানা পল্টনের ফজলুল করীম ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং বর্ষীয়ান রাজনীতিক, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈঠকে দুই পক্ষের নেতারা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনাগুলোকে ভুলে গিয়ে, সামনে দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে দেশে ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদী মনোভাব ও দমননীতির বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রয়োজনে মতৈক্যে পৌঁছান নেতৃবৃন্দ।
আলোচনার এক পর্যায়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর ও বরেণ্য আলেম মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) সরাসরি ফোনে যুক্ত হয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে ও জাতির কল্যাণে ঐক্য এবং সৌহার্দ্য বজায় রাখা জরুরি।” তিনি দুই পক্ষের মধ্যে দোস্তি ও সদ্ভাবপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখার পরামর্শ দেন।
বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে শাহবাগে ঘটে যাওয়া এক অনভিপ্রেত ঘটনার প্রসঙ্গও উঠে আসে। সেখানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদকে ফোনে যোগাযোগ করে দুঃখ প্রকাশ করেন ডা. মাহমুদা মিতু। উভয় পক্ষই ঘটনাটিকে একটি ভুল বোঝাবুঝির ফলাফল হিসেবে বিবেচনা করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে আগানোর অঙ্গীকার করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ-আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি রেজাউল করীম আবরার, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর, সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদ, সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মাওলানা সাইমুম সাদী, মাওলানা বদরুজ্জামান, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইমরান হোসাইন নূর, খায়রুল আহসান মারজান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হোসাইন ইবনে সরোয়ার এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেতা আশরাফ মাহদী, সানাউল্লাহ খান, হাছিব আর রহমান প্রমুখ বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের সৌহার্দ্যপূর্ণ উদ্যোগ দেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার যে চিন্তাভাবনা এ বৈঠকে প্রতিফলিত হয়েছে, তা দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শালীনতাকে আরও সুদৃঢ় করবে বলেই প্রত্যাশা।
Leave a Reply