পাবনা জেলা প্রতিনিধি: পহেলা বৈশাখের দিন নতুন জামা পড়ে প্রবাসে থাকা বাবাকে ভিডিও কলে দেখিয়েছিল সাত বছর বয়সী জুঁই। মুখে মেখেছিল নানা প্রসাধনী, খুশি হয়েছিলেন বাবা জাহিরুল ইসলাম। মেয়ে আর বাবার মধ্যে কিছুটা খুনসুঁটি চলার পর কথা শেষ করে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে জুঁই। সন্ধ্যায় প্রতিবেশী দাদির বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বের হয় শিশুটি। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ ছিল না।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে পাবনার চাটমোহর উপজেলার রামপুর বিলের মধ্যে একটি ভুট্টা ক্ষেতের পাশে জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করা হয়। মুখে ছিল পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন। যে মেয়ে নতুন জামা ও সাজুগুজু করে দিনভর হইহুল্লোড়ে মেতেছিল, যে মুখ দেখিয়েছিল বাবাকে। সেই জুঁইয়ের লাশ উদ্ধারে পুরো এলাকার মানুষ শোকে পাথর হয়ে গেছেন।
জুঁই পাশ্বরর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিরুল ইসলামের মেয়ে ও গাড়ফা আজেদা নূরানী কিন্ডার গার্ডেন মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রামপুর বিলের একটি ভুট্টা ক্ষেতে জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র লাশ পড়ে আছে। মুখে পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন, পড়নের প্যান্ট গলায় পেঁচানো। স্থানীয়রা সকালে শিশুটির লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবারের লোকজন সনাক্ত করেন সেই হাসিখুশি জুঁইয়ের মরদেহ। এদিকে শিশুটিকে হত্যার বিভৎসতা দেখে পুরো এলাকা জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার, চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম, বড়াইগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান। জুঁইকে ধর্ষণের পর শাসরোধে হত্যা করা হয়ছে এবং মুখ অ্যাসিডে পোড়ানো হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, শিশুটির স্বজনরা লাশের পরিচয় সনাক্ত করেছেন। শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলায়। তবে লাশ উদ্ধার হয়েছে চাটমোহর মৌজায়। আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলমন রয়েছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply