বান্দরবান প্রতিনিধি :
বান্দরবানের লামা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড লাইনঝিরির বাসিন্দা মৃত হানিফ ভান্ডারির পরিবার কর্তৃক প্রতিবেশী মো. আবদুল বারেকের পরিবার ও তাদের সন্তানদের ওপর সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে হামলা, মামলা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার(১৭ জুন)লামা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।আবদুল বারেকের পরিবারের পক্ষে মো. ইসহাক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি জানান, মৃত হানিফ ভান্ডারির ছেলেরা, বিশেষ করে আমির হোসেন, আনোয়ার হোসেন (বিজিবি সদস্য), শাহজাহান, সোহরাব হোসেন ও সোহরাব হোসেনের ছেলে মনির হোসেন প্রায়শই ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে তাদের দোকানপাটে হামলা চালায়। সর্বশেষ গত ১০/০৬/২০২৫ তারিখ রাত ৮টায় মধুঝিরি থেকে একদল ভাড়া করা সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের ভোগদখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালায়, যা পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়।
ইসহাক বলেন, হানিফ ভান্ডারির পিতা রুস্তম আলীর নামে দুই চৌহদ্দিতে মোট ৫ একর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জমি রয়েছে, যা তাদের দখলীয় জায়গা থেকে অনেক দূরে। এছাড়া রুস্তম আলীর নামে আরও ৫ একর তৃতীয় শ্রেণির জমি ছিল, যা মাতামুহুরি কলেজের নামে নামজারি হয়েছে। তাদের বর্তমান দখলীয় দোকানপাটসহ আনুমানিক ০.১৫ শতক জমি তাদের দাদা/পিতামহ ওমর আলীর নামে ৪৯৬ খতিয়ানে থাকা ২ একর জমির অংশ।
তিনি অভিযোগ করেন, ৯০-এর দশকে হানিফ ভান্ডারির পিতা রুস্তম আলী এই জায়গা জবরদখল করতে চেয়েছিলেন। তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলী মিয়ার মধ্যস্থতায় রুস্তম আলী লিখিত অঙ্গীকার করেন যে তিনি উক্ত জায়গা দাবি করবেন না। ২০০৪ সালে হানিফ ভান্ডারি পুনরায় জবরদখল করতে চাইলে লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-২৭৫, তারিখ- ৮/০৭/২০০৪) করা হয় এবং হানিফ ভান্ডারি আদালতে মুচলেকা দেন। ২০২২ সালেও একই চেষ্টা চালালে লামা থানায় আরেকটি সাধারণ ডায়েরি (নং- ৪৪৬, তারিখ: ১১/০৪/২০২২) অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সময়ে হানিফ ভান্ডারির পরিবার লামা উপজেলা নির্বাহী আদালতে পিটিশন মামলা (নং ১৯/২০২২) দাখিল করে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কানুনগো কর্তৃক সরেজমিন তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, “তর্কিত নালিশী জায়গা সরকারী রাস্তার জায়গা বিধায় পক্ষদ্বয়কে নালিশী জমিতে প্রবেশ করা হতে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া যেতে পারে।” মামলার আদেশে বলা হয়, “বাদী পক্ষের বেদখল হয় নাই মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় মামলা নথিজাত।”
মো. ইসহাক আরও অভিযোগ করেন, আমির হোসেন ও তার ভাই বিজিবি সদস্য আনোয়ারসহ তাদের চাচা ও চাচাতো ভাই মনির হোসেন রাজনৈতিক খোলস পাল্টিয়ে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এবং সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা তাদের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগিয়ে তাদের দখলীয় সম্পত্তি ও স্থাপনা ভাঙচুর ও দখলের চেষ্টা করছে।
তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই জবরদখলের পায়তারাকারী হানিফ ভান্ডারির পরিবারের আগ্রাসনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আনার দাবি জানান এবং মব সৃষ্টিকারী এই পরিবারটির রাহুমুক্তির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
Leave a Reply