মোঃ শফিকুল ইসলাম/বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলার গর্জনিয়ার পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে ধরা পড়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী ডাকাত শাহীন। বুধবার (৪ জুন) গভীর রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর কমান্ডো টিম ওই এলাকায় অভিযান চালায় এবং এক পর্যায়ে গোপন আস্তানা থেকে তাকে আটক করে।
অভিযানে শাহীনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি সাব মেশিন গান, দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন, ৭০ রাউন্ড গুলি, দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতির নানা সরঞ্জাম।
বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সকালে রামু সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শাহীন দীর্ঘদিন ধরে রামু, ঈদগাঁও এবং টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও মাদক পাচারে জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং তার আস্তানায় সামরিক ব্যবহারের মতো অস্ত্রও পাওয়া গেছে।
সেনা সূত্রে জানা গেছে, শাহীন শুধু ডাকাতিই করত না—সে সীমান্তবর্তী মাদকপথ নিয়ন্ত্রণ করত, চোরাকারবারিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করত এবং একাধিক অপহরণে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
তার গ্রেপ্তারের খবরে রামুর সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন, এমনকি কৃষিকাজও ব্যাহত হচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, ‘শাহীন দিনে-দুপুরেও অস্ত্র হাতে হুমকি দিত। সেনাবাহিনীর এই অভিযান আমাদের জন্য যেন আলোর ঝলকানি।’
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর শাহীনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে তার সহযোগী ও পুরো চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রামুর পাহাড়ে সন্ত্রাস ও অবৈধ অস্ত্রের দৌরাত্ম্য বন্ধে এই অভিযানকে একটি বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, অভিযান চলমান থাকুক, এবং যারা তার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ছিল, তারাও আইনের আওতায় আনা হোক।
Leave a Reply