মীর হোসেন মোল্লাঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তবে একে ঘিরে গত কিছুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনারদের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতেই হতে পারে। ঐতিহাসিকভাবেও বাংলাদেশের সাধারণত এই দুই মাসেই সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচন কমিশনের সূত্রগুলো জানায়, তারা নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর মাসকে বিবেচনা করছেন। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে মাঠ গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন বিএনপি- জামায়াতের সম্ভাব্য দুই প্রার্থী।
জানা গেছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চৌদ্দগ্রাম আসন থেকে বিএনপির হেভিওয়েট সম্ভাব্য প্রার্থী- কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির যুগ্ন-আহবায়ক মোঃ কামরুল হুদা অংশগ্রহন করবেন। তিনি তার প্রতিপক্ষ সম্ভাব্য প্রার্থী জামায়াতে নায়েবে আমির ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহেরকে, বিপুল ভোটে পরাজিত করার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি হাতে নিয়ে, রাজনৈতিক মাঠ গোছানোর কাজে উপজেলার কানাচে-কানাছে চষে বেড়াচ্ছেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মোঃ কামরুল হুদা ইতিমধ্যে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির নেতাদেরকে সাথে নিয়ে, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করে- ব্যাপক আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন। নেতাকর্মীদেরকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে, সাংগঠনিকভাবে তিনি দলকেও খুব শক্তিশালী করে তুলেছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটির অনুষ্ঠানে, কামরুল হুদার উপস্থিতির খবর পেয়ে বহু মহিলা ভোটাররাও সভায় যোগদান করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের জেল ঝুলুম এবং মিথ্যা মামলায় হয়রানী সহ বহু ত্যাগ তিতিক্ষাকে অতিক্রম করে, মোঃ কামরুল হুদা দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে পাশে থেকে, দীর্ঘ ২২ বৎসর চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপি’র হাল ধরে রেখে দলকে খুব চাঙ্গা করে তুলেছেন। ফলে বিএনপির হাইকমান্ডের নেতাদের দৃষ্টিতে মোঃ কামরুল হুদা দল পরিচালনার ক্ষেত্রে সফল একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পাশাপাশি চৌদ্দগ্রামের অসহায় গরিব শ্রেণীর মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত রেখে, সমাজ সেবার মধ্য দিয়ে তিনি দল-মত নির্বিশেষে, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাও অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
এদিকে, বিএনপি নেতা মোঃ কামরুল হুদার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সম্প্রতি রাজনৈতিকভাবে চার দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়। বিগত ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় চৌদ্দগ্রামের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। অতীতের উন্নয়নে বিশ্বাসী চৌদ্দগ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে ডাঃ মোঃ তাহের আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের
পর জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজার সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতি উৎসাহিত হয়ে, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও হরহামেশায় দখল বাণিজ্যে নেমে পড়ে। একের পর এক বিএনপি সহ বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের উপর আক্রমন- হামলা চালিয়ে একাধিক মারধর ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে সাধারন মানুষের মনে ভয়ানক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহেরের অর্জিত সুনাম এবং জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। সবমিলিয়ে চৌদ্দগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্ভাব্য এই দুই প্রার্থীর মধ্যে জনপ্রিয়তা দিক থেকে- এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডাঃ মোঃ তাহেরের তুলনায় মোঃ কামরুল হুদার অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা রাজনৈতিক মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থী জামায়াত নেতা ডাঃ মোঃ তাহের বনাম বিএনপির নেতা মোঃ কামরুল হুদা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিযোগিতার সর্বত্র উপজেলার আনাচে কানাছে আলোচনার ঝড় উঠেছে। জামায়াত এবং বিএনপি এই দু’দলের ভোটার ব্যতীত, অন্যান্য দল এবং সাধারণ ভোটারদের বড় একটি অংশ, বিএনপির নেতা মোঃ কামরুল হুদা কে তাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করবে বলে- বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ এক পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
Leave a Reply