কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ঐতিহ্যবাহী হোগলা চাঁপাইগাছী গাজী-কালু চম্পাবতী মেলাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাঁপাই মেলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । এতে দুপক্ষের প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছেন । আহতরা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।
আহতরা হলেন, মহেন্দ্রপুর বালিকা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, রাহাত খান, তুহিন হোসেন, জিহাদ, ইউনুস আলী, খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক শরাফাত সুলতান, সাদ্দাম মন্ডল সহ দুপক্ষের প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছেন।
জামায়াত নেতা কর্মীরা জানান, প্রতি বছর হোগলা চাঁপাইগাছী গাজী-কালু চম্পাবতী মেলায় অশ্লীল নৃত্য, জুয়া, লটারি সহ নানান অপকর্ম চলে । এ বছরে মেলার আয়োজক কমিটিকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অশ্লীল নৃত্য, জুয়া বা লটারি না রেখে গ্রামিন মেলা চালানোর জন্য বলা হয় । পরবর্তীতে মঙ্গলবার তারা প্রসাশনের অনুমতি ছাড়াই মেলা চালানো এবং নানান অপকর্ম করার পরিকল্পনা নেয় । বিষয়টি জানার পর তারা আয়োজক কমিটির কাছে মেলার অনুমতি পত্র চাইতে গেলে বিএনপির লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে।
উপজেলা জামায়াতের আমির আফজাল হোসেন জানান, প্রশাসনের অনুমতি ব্যাতিত হোগলা চাঁপাইগাছী গাজী-কালু চম্পাবতী মেলার আয়োজক কমিটি মেলা চালানোর ও নানান অপকর্ম করার চেষ্টা করলে এলাকার সচেতন মহল ও জামায়াতের কিছু কর্মী এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির কাছে শুনতে গেলে তাদের ওপর হামলা করে । এতে জামায়াতের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন ।
মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান, ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন এই মেলার চালানোর জন্য প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত দেওয়া হয় । এরপর জামায়েতের কর্মীরা তাদেরকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ও অশ্লীল নৃত্য, জুয়া বা লটারি না রেখে মেলা চালানো ব্যাপারে বলে এবং তারা তাতে সহমত দেন । কিন্তু অনেক চেষ্টার পর তারা প্রশাসনের অনুমতি পায় না । ততক্ষণে মেলার মাঝে দোকান বসে যাওয়ায় তারা এলাকার সবাইকে নিয়ে মেলা চালানোর চেষ্টা করে । এরপর মঙ্গলবার সন্ধায় জামায়েতের লোকজন হঠাৎ তাদের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের বেশকিছু লোককে আহত করে । আহতদের মধ্যে দুইজন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন । এবিষয়ে এলাকায় নতুন কোন সংঘাত চান না বলে জানান তিনি ।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য ডা.আব্দুল হান্নান জানান, এই মেলার সাথে এবং এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই । কি সুবিধাবাদী লোকজন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে এমন অপকর্ম চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি ।
কুমারখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান শেখ জানান, প্রশাসনের অনুমতি না থাকা সত্বেও একটি পক্ষ মেলা চালানোর চেষ্টা চালায় । পরবর্তীতে মঙ্গলবার দুপুরে প্রসাশনের অনুমতি নেই জানিয়ে মেলার মাঠে আসা দোকানদারের চলে যেতে বলা হয় এবং ওইদিন সন্ধায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । এতে দুইপক্ষের লোক আহত হয় । হামলা ঘটনা জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয় । বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাননি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
Leave a Reply