নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর রূপনগরের দুয়ারীপাড়ায় ফের বর্বর গ্যাং হামলার শিকার হলো সাধারণ এক রাজমিস্ত্রী। নির্মাণাধীন ভবন থেকে ফেলে দেওয়ার আগে গলায় ছুরি, মুখে ইটের আঘাত—এ যেন কোনো নাটক নয়, বাস্তবের হাড়হিম করা নরপিশাচতা। গুরুতর আহত মো. রাব্বী (১৮) এখন হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
এই অমানবিকতার মাঝেও আশার আলো হয়ে সামনে এলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক, সাবেক জাতীয় ফুটবল তারকা আমিনুল হক। সংবাদ প্রচারের মাত্র এক ঘণ্টার মাথায় ছুটে যান রাব্বীর পরিবারের কাছে। নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে কেবল ক্ষতিপূরণই নয়, রাব্বীর দুটি জটিল অস্ত্রোপচারের সম্পূর্ণ ব্যয় নিজের কাঁধে তুলে নেন এই মানবিক নেতা।
হত্যাচেষ্টা নয়—এটা হায়েনার উন্মত্ততা!
২ এপ্রিল রূপনগর থানায় রাব্বীর মা ছাবিনা বেগম যে মামলা করেন, তাতে স্পষ্টভাবে ১২ জনের নাম ও বয়স উল্লেখ ছিল। ঘটনা ঘটে ৯ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়, ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই এলাকার একটি গার্মেন্টসের সামনে।
প্রথম ছুরিকাঘাত করে শাকিল মিয়া (১৭)। এরপর একে একে মুখ থেঁতলে দেয় ইট দিয়ে, দাঁত-চোয়াল ভেঙে দেয়। পরে মৃত ভেবে ফেলে দেয় নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে।
তালিকাভুক্ত আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে!
মামলায় নাম থাকলেও আজ পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। তালিকায় রয়েছে— শাকিল মিয়া (১৭), মো. সুমন (১৭), মারুফ ওরফে কোকড়া মারুফ (১৮), পিতলা সুমন (৩৫), বাঘা মনির (৩৮), ফয়েজ হাওলাদার (৪২), আজাদুর রহমান আজাদ (৪০) সহ আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা। রূপনগর থানার ওসি মোকাম্মেল হক জানান, “চারজন আটক হয়েছে বাকিদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।
রাজনীতির ছত্রছায়ায় গ্যাংয়ের দানবীয় উত্থানঃ এই গ্যাং কখনো যুবদল, আবার কখনো আওয়ামী লীগ নাম ভাঙিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। জমি দখল, চাঁদাবাজি, গ্যারেজ বানিয়ে কোটি টাকা কামানো—সবই চলে গ্যাংনেতা শফিকুল ইসলাম মিল্টনের আশ্রয়ে। তবে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ—কিন্তু মানবতা এখনো বেঁচে আছে যেখানে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে, সেখানেই মানবতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন আমিনুল হক। কেবল সাহায্য দিয়েই থেমে থাকেননি, নিজে থেকে ওসিকে ফোন করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
একই কণ্ঠে গোটা এলাকাবাসী: গ্যাং ধ্বংস চাই, বিচার চাই! দুয়ারীপাড়ার মানুষ আজ একটাই কথা বলছে—এই গ্যাংকে যদি এখনই দমন না করা হয়, তাহলে আরও অনেক রাব্বী এভাবে মৃত্যুর মুখে পড়বে।
প্রশ্ন রয়ে যায়—এটা কি সভ্য দেশের চিত্র? নাকি গ্যাং-রাজনীতির যুগে আইনের শাসন শুধুই কাগজে?
Leave a Reply