মুহাম্মাদ রবিউল মুন্সীঃ রাজধানীর পুরানা পল্টনে অবস্থিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আইএবি মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে যোগ করতে পারেন) বিকেলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর একটি প্রতিনিধি দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে এক বিশেষ সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
এই সৌজন্য সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন ভোক্তা-সংশ্লিষ্ট সেক্টরে চলমান দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নীতিগত দুর্বলতার বিষয়ে মতবিনিময় করা এবং এই সংকট নিরসনে জাতীয়ভাবে কীভাবে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ বিনিময় করা।
সাক্ষাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, জাতীয় উলামা-মাশায়েখ-আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি রেজাউল করীম আবরার, শ্রমিক নেতা আলহাজ্ব দুলাল এবং ছাত্রনেতা হোসাইন ইবনে সরোয়ার।
অন্যদিকে, ক্যাব-এর প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা প্রফেসর এম শামসুল আলম, সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলমগীর কবীর, প্রজেক্ট অফিসার ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান গোলাম কিবরিয়া এবং কাজল রশিদ শাহিন।
সাক্ষাতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে বিদ্যুৎখাতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম, ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে ভোক্তারা আজ চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। একদিকে উৎপাদন ক্ষমতার অপচয়, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া অযৌক্তিক বিল ও লোডশেডিং—এই দুটি চিত্র বিদ্যুৎ ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তারা আরও জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও পূর্ববর্তী সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতির ধারা থেকে বের হতে পারেনি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনা এখন এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ ক্যাব-এর উত্থাপিত বিষয়সমূহকে গুরুত্ব দিয়ে শোনেন এবং বলেন, রাষ্ট্রীয় খাতগুলোতে দুর্নীতি, অপচয় ও অদূরদর্শী পরিকল্পনা শুধু ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নের পথকেও রুদ্ধ করছে। তারা বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সবসময় দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন চায়, যেখানে জনগণের কল্যাণই হবে সরকারের মুখ্য দায়িত্ব।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিদ্যুৎ খাতসহ সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহার এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে।
আলোচনার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ একমত পোষণ করেন যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নে সুশাসন, জবাবদিহিতা এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং ক্যাব ভবিষ্যতে যৌথভাবে কাজ করার এবং পারস্পরিক মতবিনিময়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এই সৌজন্য সাক্ষাৎ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা, নাগরিক অধিকার এবং ভোক্তা-সুরক্ষার প্রশ্নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply