মোসা. রিমি খানম/রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গঞ্জে মোবাইল গেমের প্রতি ভয়াবহ আসক্ত হয়ে পড়েছে,কিশোর এমনকি তরুণরা।শুধু তাই নয়, এ প্রবণতা এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ও ছড়িয়ে পড়েছে। স্মার্টফোন আর অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন গেমে তারা দিন রাত ডুবে থাকে, যা তাদের পড়াশোনা ও মানসিক স্বাস্হ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। তবে অভিভাবকদের অসচেতনতা ও সন্তানদেরকে ঠিকমতো খেয়াল না করার কারনে এই ধরনের অবক্ষয়ে বলে সচেতন মহলের অভিমত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বড়বাইশদিয়া, চালিতাবুনিয়া, রাঙ্গাবালী, চরমোন্তাজ, ছোটবাইশদিয়া, মৌডুবী, ইউনিয়নের, যুবক,কিশোরদের দলবেঁধে মোবাইলে ঝুঁকে থাকার দৃশ্য। যে বয়সে মাঠে খেলাধুলা করার কথা, সেখানে তারা ডুবেছে মোবাইল গেমের নেশায়। পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিনের বেশীরভাগ সময়ই তারা নষ্ট করছে গেমিংয়ের পেছনে।
বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মো: হাফিজুর রহমান জানান,১০-১৫ বছর বয়সী কিশোররা স্কুল শেষ করে, বাজারে বা রাস্তার পাশে বসে সারাদিন মোবাইলে গেম খেলছে। অনেক সময় গভীর রাত পর্যন্ত তারা এ কাজে লিপ্ত থাকে।
চরগংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: রুমন মুন্সী বলেন, এখন মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যাস্ত প্রাথমিক শিক্ষার্থীরাও। ক্লাসে যত টুকু শিক্ষা দেই তত টুকু যদি ঘরে বসে লেখা পড়া করে তাহলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় পড়া দিতে পারে, কিন্তু অভিভাবকদের অসচেতনতার কারনে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়া লেখার সময় হাতে মোবাইল নিয়ে থাকে।যে কারনে বিদ্যালয় এসে পড়া দিতে পারে না। আস্তে আস্তে শিক্ষার্থীদরা লেখা পড়া প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
বড়বাইশদিয়া এ হাকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: বাসেত খান বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে আসক্ত হচ্ছে বেশী। অভিভাবক ও প্রশাসনের কঠিন পদক্ষেপ ছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরন করা সম্ভব নয় বলে আমার ধারনা, আমি অবাক হই এত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কিভাবে অভিভাবকরা এত দামী / এন্ডুয়েট মোবাইল সেট কিনে দেয় অথচ তাহারা অনেকেই দারিদ্র পরিবারের সন্তান।
তবে সচেতন নাগরিক বলছেন,এই প্রবণতা রোধে অভিভাবক, শিক্ষক ও স্হানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু – কিশোরদের মাঠে খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমে উৎসাহিত করতে হবে। পাশাপাশি অনলাইন গেমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা ও জরুরি। এখনই যদি যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়া হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মানসিক, শারীরিক ও নৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো: শামীম হাওলাদার বলেন, আমরা প্রতি মিটিং এবং যে কোনো সভা সেমিনারে মোবাইল ফোনে যে কিশোর , তরুণ আসক্ত হচ্ছে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করি, সন্ধ্যায় পরে কোনো কিশোর তরুণ রাস্তায় দেখলে তাদের জিঘাসা করি কেন তার সন্ধ্যায় বাহিরে থাকে। তবে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী যেন মোবাইল ফোন নিয়ে ক্লাসে না আসে সেদিকে শিক্ষকদের নজর রাখতে হবে!
Leave a Reply