মোঃ শফিকুল ইসলাম/স্টাফ রিপোর্টার : বান্দরবানের লামার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের নবনির্মিত টেবিল টেনিস একাডেমি ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্যে নির্মিত টিটি একাডেমি ভবন কেন্দ্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের টেবিল টেনিস এক্সপ্যানশন ইনিশিয়েটিভ (টিটিইআই) প্রোগ্রাম (বান্দরবান) -এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
(৩০ আগস্ট শনিবার)সকাল ১১:০০ টায় নবনির্মিত টেবিল টেনিস একাডেমি ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সদস্য-সচিব, পুলিশ সংস্কার কমিশন এবং চেয়ারপার্সন, টেবিল টেনিস এক্সপ্যানশন ইনিশিয়েটিভ (টিটিইআই) প্রোগ্রাম। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রোটারিয়ান জনাব মোঃ সাইদুল হক সাদি, একাধিকবারের সাবেক জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন ও জাতীয় এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ এবং চেয়ারম্যান, ব্রাইট পাওয়ারটেক লিমিটেড। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক (যুগ্মসচিব): প্রশাসন ও অডিট আইন, বিআরটিএ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ বিমানের পাইলট জনাব ক্যাপ্টেন এ.এম. মাকসুদ আহমেদ সনেট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন। এছাড়াও জনাব মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, উপ-পরিচালক (উপ-সচিব)প্রশাসন, বিআরটিএ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, জনাব আল মারুফ এনায়েত হোসেন, উপদেষ্টা, টেবিল টেনিস এক্সপ্যানশন ইনিশিয়েটিভ (টিটিইআই)জনাব বখতিয়ার মাহমুদ সোহেল, উপদেষ্টা, টেবিল টেনিস এক্সপ্যানশন ইনিশিয়েটিভ (টিটিইআই)জনাব আলী ইকরাম সাকি, প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট, ব্যাংক এশিয়া। জনাব শিহাব উদ্দিন খান, ডিরেক্টর, বিজ ডেভেলপমেন্ট, কসমিক কনসালটেন্সি বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের জাতীয় কোচ জনাব মোহাম্মদ আলী: চট্টগ্রামের স্বনামধন্য টেবিল টেনিস কোচ জনাব নোমান সুফিয়ান জনাব আবেদ হোসেন ফারুক উপস্থিত ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন জনাব শামীম আরা রিনি, মাননীয় জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বান্দরবান পার্বত্য জেলা। প্রোগ্রামটি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্যে সার্বক্ষণিক পরামর্শ, যোগাযোগ ও প্রোগ্রামস্থলগুলো প্রোগ্রাম পূর্ববর্তী পরিদর্শন এবং প্রোগ্রামের দিন মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ মঈন উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লামা উপজেলা। জনাব জয়া দত্ত, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ)-স্থানীয় সরকার শাখা, তথ্য ও অভিযোগ শাখা, শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা এবং সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) এবং তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জনাব রুবায়েত আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), লামা। বিশেষ পরামর্শ প্রদান করেন মো. আমজাদ হোসেন, উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা (জেলা প্রশাসক মহোদয়ের গোপনীয় শাখা-অফিস অতিরিক্ত দায়িত্ব রাজস্ব শাখা, সহকারী-পর্যটন সেল) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বান্দরবান এবং জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
পুরো প্রোগ্রামটির নিরাপত্তা ও প্রোটোকল প্রদান করেন কেয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ সদস্য। কোয়ান্টামমে এসে পৌঁছালে মাননীয় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভ্যর্থনা জানান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীলগণ। এরপর কোয়ান্টামম থেকে হিকমান ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছালে মাননীয় অতিথিবৃন্দকে বিউগল বাজিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে গার্ড অব অনার প্রদান করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট দুটি কোয়ান্টা প্যারেড চৌকস দল। গার্ড অব অনার প্রদানকালে বিশেষ ব্যান্ড পরিবেশন করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের বাদক দল। সালাম গ্রহণের পর মাননীয় অতিথিবৃন্দ হিকমান ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে অতিথিবৃন্দ কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের নবনির্মিত টেবিল টেনিস একাডেমি ভবন উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে ক্ষুদে টেবিল টেনিস ক্রীড়াবিদদের উৎসাহ প্রদানের জন্যে মাননীয় প্রধান অতিথি ও সাবেক জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ এবং গেস্ট অব অনার একাধিকবারের সাবেক জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন ও জাতীয় এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ রোটারিয়ান জনাব মোঃ সাইদুল হক সাদি একটি প্রদর্শনী খেলা উপহার দেন।
খেলাটি উপস্থিত সকল দর্শক উপভোগ করেন। এরপর সকল অতিথিবৃন্দ কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের হিকমান ক্যাম্পাসের নেয়ামাতান হলে উক্ত প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের নির্বাচিত ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী, শতাধিক শিক্ষক, ১৩৪ জন টেবিল টেনিসের ক্ষুদে ক্রীড়াবিদ, কোয়ান্টামমের বিভিন্ন স্তরের ৫৫ জন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, সুধীজনসহ প্রায় সহস্রাধিক ব্যক্তিবর্গ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্ব-অর্থায়নে টেবিল টেনিস একাডেমি ভবনটি নির্মাণ করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তার অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে বলেন, “কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের যেভাবে গড়ে তুলেছে, যেভাবে সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ করে দিয়েছে সেজন্যে প্রতিষ্ঠানটি আসলেই প্রশংসার দাবিদার। শিক্ষার্থীদের ফিজিক্যাল ও মেন্টাল ফিটনেসের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, এই শিক্ষার্থীরা অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। যেহেতু টেবিল টেনিস একটি বুদ্ধিভিত্তিক খেলা, তাই খেলাটির জন্যে এরা বিশেষভাবে উপযুক্ত। এরাই পারবে দেশের পতাকাকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে।
সভাপতির বক্তব্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলার মাননীয় জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব শামীম আরা রিনি মহোদয় শিক্ষার্থী ও ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন তোমাদেরকে যে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে, তোমরা তা অনুভব করবে। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এরকম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নেই। এই সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তোমরা বিশ্ব দরবারে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করবে।
কোয়ান্টাম শিক্ষাসেবা কার্যক্রমের ইনচার্জ জনাব ছালেহ আহমেদ বলেন, জাতীয় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের প্রথম ‘অলিম্পিকে সোনা আমরা জিতবই’ প্রত্যয়টি কোয়ান্টাম উন্মোচন করে এবং এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কোয়ান্টামমে গ্রাউন্ড অলিম্পিয়ান প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে এরই অংশ হিসেবে জিমন্যাস্টিকস কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং এর সাথে নতুন করে যুক্ত হলো টিটিইআই-এর কার্যক্রম।
সম্পূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব রুবায়েত আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), লামা উপজেলা।
অনুষ্ঠান শেষে মাননীয় অতিথিবৃন্দকে কারুমমের পণ্য উপহার দেওয়া হয়। টিটিইআই প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ক্ষুদে টেবিল টেনিস ক্রীড়াবিদদের জন্যে ১টি টিটি টেবিল, ৮টি ব্যাট, ১০০টি বল, ১৯০টি জার্সি এবং বিভিন্ন ক্রীড়া ও শিক্ষা সামগ্রী উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মাননীয় অতিথিবৃন্দ জিমন্যাস্টিকস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে অতিথিবৃন্দ জিমন্যাস্ট কোয়ান্টাদের মনোমুগ্ধকর জিমন্যাস্টিকস প্রদর্শনী উপভোগ করেন। জিমন্যাস্টিকস পরিদর্শন শেষে মাননীয় অতিথিবৃন্দ কোয়ান্টামম সেন্টারে ফিরে আসেন এবং জিম হলে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা-বঞ্চিত ও অনাথ ২২ জনগোষ্ঠীর আড়াই সহস্রাধিক শিশুকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আবাসিক সুবিধাসহ পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে কোয়ান্টাম। বুয়েট, মেডিকেল ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী চান্স পেয়েছে। ইতোমধ্যে মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে অনেকেই বের হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষা ও ক্রীড়ায় রয়েছে এক অভিনব সাফল্য।
Leave a Reply