কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার নগরীতে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে মহরম হোসেনের (৩৫) নামে এক যুবককে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অপু হোসেন (৩৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে নগরীর কাটাবিল মসজিদের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতের বোন রুনু বেগম বাদী হয়ে গতকাল রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৭ জনকে আসামি করে কোতয়ালীয় মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। গ্রেপ্তারকৃত নগরীর কাটাবিল এলাকার মৃত শাহজান মিয়ার ছেলে।
তার বিরুদ্ধে থানায় ২৭টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৃতের বিরুদ্ধে মাদক, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার দায়ে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদক কারবার নিয়ে দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। নিহত কুমিল্লা নগরীর মুরাদপুর এলাকার চারু মিয়ার ছেলে। তিনি শ্বশুরবাড়ি কাটাবিল এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তার ১১ বছরের একটি মেয়ে ও ৭ বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মহরম ও তার বন্ধু অপু শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে নগরীর কাটাবিল মসজিদের সামনে দিয়ে মোটরসাইকযোগে পাথুরিয়াপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত হঠাৎ তাদের ওপর হামলা চালায়।
অপুকে মোটরসাইকেল থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে দিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মরহমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেপ্তারের আগে নিহতের বন্ধু অপু জানান, কাটাবিল মসজিদের সামনে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে তাকে ধরে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে দেয় তারা। চালকের আসনে থাকা অবস্থায় মহরমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
মৃতের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, গত ১৫ দিন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই পরিকল্পিতভাবে মহরমকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘খুনিরা আমার সব শেষ কইরা দিল। অহন আমি কি লইয়া থাইক্কাম? খুনিরা আমার সব শেষ করে দিছে। আমার বাপের বাড়ির সামনে আমার জামাইরে কোপাইয়া মারছে। আমার দুইটা পোলা-মাইয়া মাদরাসায় পড়ে। অহন আমি কই খাইয়াম তারারে লইয়া। আমার তো সব শেষ হইয়া গেল। যারা আমার স্বামীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে তাদের ফাঁসি দাবি জানাচ্ছি।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত যুবকের বিরুদ্ধে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, মাদক কারবার–সংক্রান্ত দ্বন্দ্বে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও ২৭টি মামলা রয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
Leave a Reply