‘সময় অসময়’-এর ফিরোজ ভাইয়ের জীবন এখন অসময়ে…
==========================================
আমি যার পাশে বসে ছবি তুলেছি, তিনি বহুল পরিচিত সাংবাদিক ফিরোজ ভাই। তার পুরো নাম শেখ মো. সালাউদ্দিন ওরফে ফিরোজ। চাটমোহর পৌর সদরের আফ্রাতপাড়া মহল্লার বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা।
তিনি ছিলেন আমার শুভাকাঙ্ক্ষী, পরম বন্ধু, শ্রদ্ধাভাজন, প্রিয় অভিভাবক, একনিষ্ঠ পরামর্শক। পেশাগত জীবনে তিনি ‘সাপ্তাহিক সময় অসময়’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক, ‘দৈনিক স্বত:কন্ঠ’ পত্রিকার চাটমোহর প্রতিনিধি এবং ‘চাটমোহর রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও বলাকা পরিবহনের কাউন্টার মাষ্টার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতি’র নির্বাচিত সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ভূতপূর্ব উপদেষ্টা।
সংস্কৃতিমনা শেখ সালাহ উদ্দিন ফিরোজ স্থানীয় পর্যায়ে আয়োজিত যাত্রাপালা অথবা মঞ্চ নাটকে অনবদ্য অভিনয় করেছেন। এছাড়াও অনুষ্ঠান উপস্থাপক। উপস্থাপনার সময় তার দরাজ কন্ঠে বিভিন্ন ডায়লগ বাজি এবং অট্টহাসি দর্শক-স্রোতাদের বাড়তি বিনোদনে উৎস হতো।
এক সময়ের নানামুখী প্রতীভায় সমন্বিত বিশাল দেহী শিশুসুলভ মানসিকতার ফিরোজ ভাই অতীত হারিয়ে আজ মৃয়মান। ফিরোজ যে এখনও পৃথিবীর জীবন্ত একজন মানুষ এটা সম্ভবত: অনেকেই ভুলতে বসেছেন! কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, বিগত বছর গুলোয় ফিরোজ ভাইয়ের জীবন সংকটাপন্নের মধ্যে চলছে। দফায় দফায় স্ট্রোকের ছোবল, ডায়াবেটিসের উত্থান-পতন, পিত্ত থলি সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার অপারেশন! ইত্যাদি বিভিন্ন শরীরিক জটিলতায় আচ্ছন্ন ফিরোজ ভাই দিনরাত বিছানায় শুয়ে-বসে, ফেলে আসা স্মৃতি হাতড়ে চলেছেন। দুর্বল শরীরে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শে অতিবাহিত হচ্ছে তার দৈনন্দিন যাপিত জীবন।
দিনমান প্রতীক্ষা, হয়তো কোনো প্রিয়জন তাকে দেখতে, তার সাথে কিছুটা সময় কাটাতে, তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে আসবেন! কিন্তু দিন-সপ্তাহ, মাস-বছর, নিকট আত্মীয়-স্বজন ছাড়া প্রিয় বন্ধু-বান্ধব, সুধীজন-প্রিয়জন তেমন কেউ আসেনা, কেউ খবর রাখেনা, ফিরোজ কোথায় আছে? কেমন আছে? ফিরোজ কি বেঁচে আছে? এইতো জীবন!
এ জন্যই হয়তো কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার মাত্র দু’লাইনে লিখে গেছেন অমর কবিতা-
“সুসময়ে অনেকেই বন্ধু বটে হয়,
অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়।”
————————————————————————————
কে, এম, বেলাল হোসেন স্বপন
প্রকাশক ও সম্পাদক
সাপ্তাহিক সময় অসময়
চাটমোহর, পাবনা।
০১৭১৫ ৫০৭৬০০
Leave a Reply