স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রকাশ্যে দিবালোকে বাড়ীঘরে হামলা ভাঙচুর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পঙ্গুত্ব করে দেয়ার মত নির্মম নির্যাতনের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক হামলার ঘটনাটি গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালবাগ রাস্তার মাথায় এলাকায় ঘটে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার বিষয়ে নিহার বেগম (৪৫) বাদী হয়ে ১১জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করলেও কোন প্রতিকার পায়নি আহত ভূক্তভোগীরা। কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে দায়ের করা (সিআর-৯৮/২৫) উক্ত মামলার বিষয়ে পুলিশ এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন বাদী নিহার বেগম।
মামলা এবং স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার জোড়কানন ইউনিয়নের লালবাগ রাস্তার মাথার মৃত আবদুল আজিজের ছেলে মোঃ আজাদ মিয়া(৫০) সাথে লালবাগ দক্ষিণ পাড়ার কামাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন গংরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে আজাদ মিয়ার ও তার পরিবারকে নানান রকম হুমকি দিয়ে আসছে। ঘটনার একদিন আগে আজাদ মিয়ার চালিত অটো রোড়ে চালাতে হলে আলমগীর হোসেন গং সন্ত্রাসী বাহিনীকে চাঁদা দিতে হবে বলে একটি অজুহাত সৃষ্টি করে এবং প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে আজাদের কাছে দাবী করে। অটো চালক আজাদ মিয়া তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায়- গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ৭ ঘটিকার সময় আলমগীর গং সন্ত্রাসীরা তাদের পূর্বপরিকল্পিতভাবে আজাদ মিয়ার থেকে চাঁদায় আদায়ের উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে তার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। সন্ত্রাসী আলমগীর তার বাহিনী নিয়ে আজাদ মিয়াকে ডাকাডাকি শুরু করলে- সে ঘর থেকে বের হলে আলমগীর চাঁদা দেয়ার বিষয়ে অস্বীকার করার অপরাধে উত্তেজিত হয়ে অটো চালকের বাড়িঘর ভাঙচুর শুরু করে। সন্ত্রাসীরা দরজা জানালার পিটিয়ে ভেঙ্গে ফেলে আজাদকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে অন্যত্র তুলে নিয়ে যায়। এসময় আজাদের স্ত্রী নিহার বেগম ও মেয়ে তাজমিন আক্তার বাধা প্রদান করলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে মারধর করে, জোরপূর্বক টানা করে বাড়ি হতে বের করে লালবাগ দক্ষিণপাড়া নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা আজাদ মিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে উভয় হাত পা চেপে ধরে রাখে। সন্ত্রাসীরা আলমগীর হোসেন ও রিয়াজ হোসেন তাদের হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আজাদ মিয়াকে পিটাইয়া উভয় পায়ের হাটুর নিম্নাংশে মারাত্মক হাড়ভাঙ্গা জখম করে। সন্ত্রাসী অপু(২০), সোহেল(২৬), শরীফ(২৭) বেলায়েত(৩০), মোঃ শরীফ হোসেন(২৫), কামাল(৬০), সহিদ(৩০), ফাহাদ (২৬) গংদের হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে আজাদকে পিটিয়ে উভয় হাতের আঙ্গুলে হাড় ভাঙ্গা জখম করে এবং মাথার ডান পাশের উপরে অংশে ও কোমরের পিছনের অংশসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেতলানো জখম করে। এসময় আহত আজাদের মৃত্যু হয়েছে মনে করে সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে আক্রমণ করে পূনরায় ভাঙচুর শুরু করে। স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে সন্ত্রাসী আলমগীর ও রিয়াজ হোসেন আহত আজাদের মেয়ে তাজমিন আক্তার (২১) এর পরনের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা আজাদের আরেক মেয়ে সানজিদা আক্তারের পরনের শাড়ী ব্লাউজ টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী করে। সন্ত্রাসী পারভেজ ও অপু মিয়া এসময় আজাদের স্ত্রী নিহার বেগমের গলায় পড়নে থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
জানা যায়, সন্ত্রাসী রিয়াজ হোসেন আহত আজাদের মেয়ে তাজমিনের গলায় থাকা পাঁচ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীর আহত আজাদের ঘরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রায় ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন করেছে বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণাৎ সন্ত্রাসীদের তান্ডবে আওয়াজ শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আহত তাজমিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। অন্যদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুরুতর আহত আজাদ হোসেন (৫০) কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করায়।
Leave a Reply