মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন- আমাদের ওপর এখন অনেক দায়িত্ব। আমরা যেনো আওয়ামী লীগ না হই। আওয়ামীলীগ যেসব কর্মকান্ড করেছে যে দুর্নীতি করেছে,মানি লন্ডারিং করেছে হত্যা গুম খুন করেছে। আমরা যেন তাদের কর্মকান্ড থেকে শিক্ষা নিতে পারি।
তিনি বলেন- একাত্তর যে না দেখেছে একাত্তরে বাঙ্গালি যে কি সাহসী জাতি ছিল বিশেষ করে তরুণ ছাত্ররা এবং তরুণ সৈনিকেরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে দেশের স্বাধীনতার জন্যে। এবং তাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।
তিনি বলেন -এখন জাতীয় জীবনে ক্রান্তিলগ্নে আমরা উপনীত হয়েছি। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পর বিশেষ করে বিএনপি সতের বছর সংগ্রামের পর এবং সব শেষে এ তরুণ ছাত্র যুবক তাদের অভিভাবকরা সবাই মিলে রাজপথে নেমে হাসিনার মাফিয়াতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছে। আল্লাহর গজব তাদের ওপর পড়েছে। সেজন্য দেশ ছেড়ে তাদেরকে পালাতে হয়েছে। কতো বড় বড় কথা বলেছেন,আওয়ামীলীগ পালায় না৷ শেখ হাসিনা পালায় না কোথায় এখন?
যাই হোক এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর এখন মহা গুরুদায়িত্ব রয়েছে। ইনশাআল্লাহ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে হবে। ইনশাআল্লাহ জনগণের সমর্থন নিয়ে আবার রাস্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে জনগণের প্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল । আজকে প্রয়োজন ছিল সাইফুর রহমানের মতো অভিভাবকের একজন রাজনৈতিকের। তিনি পুরো দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন।যার কথায় সারা বাংলাদেশ আন্দোলিত হতো। এবং যিনি উন্নয়নের রুপকার হিসাবে আবার বাংলাদেশ কে এক স্বর্ণযোগে নিতে সক্ষম হতেন।শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের এম সাইফুর রহমান অডিটোরিয়ামে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ বাংলাদেশের আয়োজনে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য, বরণ্যে রাজনীতিবিদ ও খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্মৃতি পরিষদের সভাপতি সৈয়দ তৌফিক আহমদের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ড.আব্দুল মতিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন এম সাইফুর রহমানের বড় ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য স্মৃতি পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম নাসের রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আলিমুল ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি কে গউছ, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক মো. ফয়জুল করিম ময়ূন, সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম রিপন ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
তিনি আরোও বলেন- আমি তাঁর স্নেহ ধন্য ছিলাম প্রথমদিকে সিলেটি ভাষা বুজতাম না। তার বক্তৃতা অনেক সময় সিলেট এক্সচেন ছিল। এটা নিয়ে আমাদের এমপিরা মাঝে মাঝে আলাপ আলোচনা করতো একটু হাসি ঠাট্টা করতো। একদিন তিনি বক্তৃতার মধ্যে বলতেছেন চোর চোর চোর। আমার পাশে আওয়ামী লীগের একজন বলে ভাই চোর কি চোর কি? আমি বললাম তোমারা এটা বুজতে পারবা একাজে তো তোমারা খুব দক্ষ। শিগগিরই এর প্রমাণ পাবা। সুতরাং তার যে বক্তৃতা অদ্ভুত তার বক্তৃতা।
শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর প্রথম যে সংসদ অধিবেশন হয় নতুন সংসদ ভবনে। আমি তখনো রাজনীতিতে আসিনাই বাড়িতে বসে টেলিভিশনে দেখছি। বাজেট বক্তৃতা তিনি দিচ্ছেন দাঁড়িয়ে। যখন এই জিয়াউর রহমানের নামটি নেন পকেটে থেকে রুমালটি বের করে তার অশ্রু মুছেন। যতোবার জিয়াউর রহমানের নাম নিয়েছেন ততোবার তার চোখ থেকে তার অশ্রু বিসর্জন দিয়েছেন। এই যে নেতার প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা। জিয়াউর রহমান তো এখন বেঁচে নাই। সাইফুর রহমানের যে স্ট্যটাস কাউকে তোষামোদ করা খুশি করা তার দরকার নাই। নিজের কৃতিত্বে তিনি দেদীপ্যমান। কিন্তু নেতার প্রতি এ ভালবাসা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বেগম জিয়া তো খবরই নিতেন না কি হচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে। সাইফুর রহমান আছেন উনি দেখবেন যা করার। তখনো এই যে ব্লাংক চেক তাকে দিয়েছেন এই জন্য কখনো তাকে আপসোস করতে হয়নি। সাইফুর রহমান অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় পরিচালনা করেছেন।
বক্তারা বলেন, এম সাইফুর রহমান শুধু দেশের অর্থনীতি সংস্কারের নকশা তৈরি করেননি, বরং বাংলাদেশকে বৈশ্বিক অঙ্গনে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা ও কর্মদক্ষতা আজও দেশের অর্থনীতির জন্য দিশারী হয়ে আছে।
পরে এস এস সি’র অসচ্ছল ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন প্রধান অতিথি। পরে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকাল ১১ টা থেকে এম সাইফুর রহমানের নিজ বাড়ি বাহারমর্দানে কবরে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা পৌর বিএনপি যুবদল,ছাত্রদল,কৃষকদল,মৎসজীবি দল সহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় কবর জিয়ারতসহ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল খাবার বিতরণ করা হয়।
Leave a Reply