চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় হাফেজ মো: মোফাজ্জল হোসেন তৈয়ব প্রকাশ ফাহাদ মোল্লা (১৭) নামে এক মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। নিহত ফাহাদ উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের করপাটি পূর্বপাড়া মোল্লা বাড়ীর মো: মীর হোসেন মোল্লার একমাত্র ছেলে এবং স্থানীয় মরকটা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের চাচাতো ভাই প্রবাসী মো: সানজিম মোল্লা।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে মোফাজ্জল হোসেন ফাহাদ তার জেঠাতো ভাই সানজিম মোল্লা সহ জেঠাতো বোন মোসা: রুবির স্বামীর বাড়ি পাশ্ববর্তী মরকটা গ্রামে দাওয়াত খেতে যায়। দাওয়াত খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে জেঠাতো ভাইয়ের মোটরসাইকেল নিয়ে বিকাল তিনটায় একা একা নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্যে আসার সময় শাহ ফখরুদ্দীন সড়কের করপাটি দক্ষিণপাড়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। এ সময় তার মাথা, গলার ডানপাশ, পেট সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক কাটাছেড়া রক্তাক্ত জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকাল অনুমান সাড়ে চারটায় হাসপাতালের কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। আইনী প্রক্রিয়া শেষে সন্ধ্যায় তাকে বাড়িতে আনা হলে পরিবার সহ সমগ্র গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। জানা গেছে, সে গত দুই বছর পূর্বে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের দৈয়ারা নূরানী হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে হেফজ পড়া শেষ করে মরকটা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। তিন বোনের একমাত্র আদরের ভাই ছিল সে। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় করপাটি পূর্বপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদ মাঠে নিহতের জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে জানা গেছে। নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহাদকে এক নজর দেখতে আশেপাশের গ্রাম থেকে ছুটে আসছে তার শিক্ষক-সহপাঠীরা সহ আত্মীয়-স্বজনগণ। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়েছে। দেখতে আসা আত্মীয়রা কেঁদে কেঁদে চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছেন।
এদিকে পরিবারের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা-বাবা, বোন সহ আত্মীয়-স্বজনরা বারবার কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন। পরিবারে বইছে শোকের মাতম। স্বজনদের গগনবিদারী চিৎকারে যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
Leave a Reply