স্টাফ রিপোর্টার: সাভারে ছাত্রহত্যা, ধর্ষণ ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মূল হোতা সাভার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা পলাতক হলেও তার ডানহাত কামাল, মনির এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগী তারেক এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতা এই অপরাধীদের আরো বেপরোয়া করে তুলেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান সোহেল রানার অন্যতম সহযোগী কামাল ও মনিরের রাখা বিপুল পরিমাণ কালো টাকা, অবৈধ অস্ত্র—পিস্তল, শর্টগান, দা, কুড়ালসহ প্রাণঘাতী সরঞ্জাম সবই উদ্ধার করা সম্ভব।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারেকের কাছে লুকিয়ে রাখা অস্ত্রগুলোর মাধ্যমেই সোহেল রানার বাহিনী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট ছাত্র-জনতার উপর চালায় নারকীয় হামলা। এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ও মধ্যস্থ ব্যক্তি হওয়ায় তারেককে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেরিয়ে আসবে পলাতক কামাল, মনিরের অবস্থান এবং লুট হওয়া অস্ত্রের হদিস।
হামলার বিস্তার: সাভার থেকে মিরপুর পর্যন্ত
৪ আগস্ট শুরু হওয়া ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর প্রথম হামলা হয় সাভার সিএমবি বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। এরপর ক্রমান্বয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে আশুলিয়া বাজার, বাইপাইল, হেমায়েতপুর, আমিনবাজার, গাবতলি, মিরপুর-১, মিরপুর-২, মিরপুর-৬ এবং মিরপুর-১০ পর্যন্ত।এই হামলায় অংশ নেয় প্রায় ২০ হাজার আওয়ামী লীগপন্থী সন্ত্রাসী। পেছন থেকে নির্দেশনা দেন নিখিল ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার বাহিনী। রক্তাক্ত সাভারে ছড়িয়ে পড়ে আগুন ও বারুদের গন্ধ।
তারেক: চেহারায় সাদাসিধে, কাজে ভয়ঙ্কর
চেহারায় সাধারণ হলেও তারেক একাধিক নারীর সর্বনাশ করেছে। চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিছানায় নারীদের ‘উপহার’ দেয়ার ঘৃণ্য চক্রের প্রধান ছিল সে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চালিয়ে গেছে ভয়ঙ্কর নারী শোষণ।
আওয়ামী লীগের ভাঙন ও ছদ্মবেশ
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দেশের রাজনীতিতে নেমে আসে অস্থিরতা। অনেক এমপি, মন্ত্রী আত্মগোপনে চলে যায়। কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে, আবার অনেকেই ছদ্মবেশে বিএনপির ছায়ায় আশ্রয় নেয়। তারেকও সেই ধরণেরই এক গুপ্তচর—ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী যোগাযোগ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
এলাকাবাসীর আহ্বান: সাভারের কলমা এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন,
“এই পশু তারেক রহমানকে এখনই গ্রেফতার না করলে, দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এই অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি না করে শান্তি ফিরবে না।”
চেয়ারম্যান সোহেল রানা ও তার বাহিনীর বর্বরতা, কামাল-মনিরের পলায়ন, আর মোঃ তারেক রহমানের প্রকাশ্য অপতৎপরতা আজ দেশের আইনের চোখে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় এসেছে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের।
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো পক্ষ থেকে তারেক বা অন্যান্যদের গ্রেফতারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply