নেছারাবাদ থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিনিধি সোহেল রায়হানের তথ্য চিত্রে দেখুন বিস্তারিত
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার ৭ নং গুয়ারেখা ইউনিয়নে শ্যামল ছায়া সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে শত শত গ্রাহকের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২১ সেপ্টেম্বর রবিবার ইউনিয়নের চাঁদকাঠী বাজারে এলাকাবাসী মানববন্ধনের আয়োজন করে। সরেজমিনে সমিতির গ্রাহকদের কাছ থেকে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে স্বরুপকাঠীর আতা সমবায় সমিতির আওতাধীন ৭ টি ব্রাঞ্চের শত শত প্রান্তিক সহজ সরল মানুষকে মেয়াদ শেষে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
উল্লেখ্য, স্বরুপকাঠীর আতা বহুমুখী সমবায় সমিতির আওতাধীন ৭ নং গুয়ারেখা ইউনিয়নের রোঙ্গাকাঠী ব্রাঞ্চের নাম শ্যামল ছায়া। যার মালিক স্বরুপকাঠী উপজেলার উত্তম কুমার মিস্ত্রি ও সমিতির বর্তমান ম্যানেজার হাসিব সিকদার। ভুক্তভোগীদের দাবি, তারা সবাই এই প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের জীবনের কষ্টের টাকা জমা রেখেছে কিছু মুনাফার আশায়। কিন্তু প্রতারক উত্তম কুমার মিস্ত্রি ও ম্যানেজার হাসিব সিকদার মিলে তাদের সকলের সমিতিতে জমানো প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যা তারা সমিতির মালিক উত্তম কুমার মিস্ত্রি ও ম্যানেজার হাসিব সিকদারের কাছে চাইতে গেলে তারা অসহায় গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রকার হয়রানি ও হুমকি প্রদান করেন এবং তাদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে মালিক উত্তম কুমার মিস্ত্রি ও ম্যানেজার হাসিব সিকদার মামলা মোকদ্দমা সহ বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি প্রদর্শন করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহক স্থানীয় লিটন শেখ বলেন, তার নিজের জমানো প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। কয়েকবার তাদের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে তারা আজ নয় কাল নয় করে দিনক্ষেপন করছে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রকার ছলচাতুরী করে টাকা না দেওয়া সহ সকল গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এতে আমরা অসহায় হয়ে পড়ছি এবং তারা আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি প্রদর্শন করছে এবং মামলা হামলা করে আমাদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি যাতে অসহায় গ্রাহকদের কষ্টে অর্জিত সীমিতিতে জমানো টাকাগুলো সবাই ফেরত পাই।
সরেজমিনে গ্রাহকদের কাছে গচ্ছিত স্ট্যাম্প ও সমিতির জমা বহিতে দেখা যায়, গ্রাহকদের মাঝে কেউ ২০ হাজার ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১/২/৪/৬/৮/১০ লাখ পর্যন্ত টাকা পায়। অথচ সমিতির মালিক পক্ষ গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়াতো দুরের কথা উপরন্তু তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার মামলা হামলার ভয় দেখায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় হিরন শেখ বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে এলাকার জাকির মেম্বার আওয়ামী দোসরদের সাথে হাত মিলিয়ে সমিতির মালিককে সহযোগিতা করছে এবং জাকির মেম্বারের আপন ভাতিজা হাসিব সিকদারকে সমিতির ম্যানেজার বানিয়ে মালিক উত্তম কুমার মিস্ত্রিকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতে সহযোগিতা করে মোটা অংকের কমিশন খাচ্ছে। এই সমিতির মূল হোতা এরা তিনজন। এরা হলেন, সমিতির মালিক উত্তম কুমার মিস্ত্রি, সমিতির ম্যানেজার হাসিব সিকদার ও সীমিতির অনৈতিক সর্বাত্মক সহযোগিতায় স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার জাকির হোসেন।
এলাকাবাসী দাবি করেন, এরা গ্রামের সহজ সরল অসহায় মানুষের কষ্টে অর্জিত কোটি টাকা আত্মসাতকারী এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাদের টাকাগুলো যাতে ফেরত পেতে পারে তার জন্য প্রশাসন, ইউএনও মহোদয় ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। যাতে তারা পুরোপুরি নিঃস্ব না হয়ে দুমুঠো ডাল ভাত খেয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন।
Leave a Reply