মু. আজিজ, ফটিকছড়ি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার পশ্চিম সুয়াবিল ১ নং ওয়ার্ড, তৈয়ুবিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় দুঃসাহসিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। কৃষক মু. আবুল হাসেমের গোয়াল ঘর থেকে গত রাতে তিনটি গরু চুরি হয়ে যায়।
কৃষক আবুল হাসেম জানান, রাত আনুমানিক দুইটার দিকে তিনি গোয়াল ঘরে গিয়ে গরুকে খাবার দেন এবং মশা তাড়ানোর জন্য লাকড়ির ধোঁয়া দেন। পরে ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর গোয়ালের ভেতরে অন্য একটি গরুর অস্বাভাবিক শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে দরজা খুলে বাইরে আসতে চান, তখন দেখতে পান—চোরেরা ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়েছে।
পেছনের দরজা দিয়ে বাইরে এসে গোয়ালে গিয়ে দেখেন, তার তিনটি গরু নেই। গোয়ালের বাইরে থাকা আরেকটি গরুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, এই গরুটি চোরের গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছে।
চুরি হওয়া গরুগুলোর মধ্যে ছিল দুইটি দুধেল গাভী ও একটি বাছুর। এর মধ্যে একটি গাভী কিছুদিনের মধ্যে বাচ্চা দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন এই গাভী থেকে আড়াই থেকে তিন কেজি দুধ পেতেন আবুল হাসেমের পরিবার, যা বিক্রি করে তাদের সংসার চলত।
কৃষকের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,
“সন্তানের মতো লালন-পালন করা গরুগুলো গোয়াল ঘরে না দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। পরে অঝোরে কান্না করেছি। গরুগুলোই ছিল আমাদের সংসারের ভরসা।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এর আগেও আবুল হাসেমের গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি হয়েছিল। এবারের ঘটনায় পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
কৃষক আবুল হাসেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“সরকার কৃষকদের গরু-ছাগল পালনে উৎসাহিত করে। কিন্তু চুরি হয়ে গেলে কোনো সহযোগিতা মেলে না। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলে কোনো ফল পাওয়া যায় না। তাই থানায় অভিযোগও করিনি। বিচার আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিয়েছি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফটিকছড়িতে প্রায়ই এ ধরনের গরু চুরির ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা বলেন,
“প্রশাসন চাইলে এ ধরনের চোরকে ধরা তাদের জন্য কোনো কঠিন কাজ নয়। প্রশ্ন হচ্ছে—রাত তিনটার পর কীভাবে চোরের গাড়ি এভাবে অবাধে চলাচল করে? আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে চোরদের গ্রেপ্তার করে কৃষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ফটিকছড়ি উপজেলার কৃষক সমাজ এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
Leave a Reply